আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : উচ্চ আদালতের রায় প্রতিপালনে কালক্ষেপন করছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কর্মকর্তারা। চীফ প্লানিং অফিসার পদে অবৈধভাবে চাকরিচ্যুতর আদেশের উপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও তা এখনো বিসিসি কর্তৃপক্ষ মানছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে উল্টো অর্গ্রানোগ্রাম বর্হিভুত ভাবে টাউন প্লানার পদে অবৈধভাবে সৈয়দা তাবাসসুম ইসলামকে তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন সদ্য অপসারিত সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।

সূত্রে আরও জানা গেছে, আদালতের নির্দেশ পালনের প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় অবৈধ নিয়োগ পাওয়া টাউন প্লানার সৈয়দা তাবাসসুম ইসলাম চীফ প্লানিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেতে প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় এক বিএনপি নেতার মাধ্যমে তদবির শুরু করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

তবে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া টাউন প্লানার কিভাবে আদালত থেকে স্টে জারি করা চীফ প্লানিং অফিসার পদে নিয়োগ পেতে তদবির শুরু করেছেন তা নিয়ে বিসিসির কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে চুক্তিভিত্তিক টাউন প্লানার পদে বিসিসিতে নিয়োগ পেয়েছেন সানজিদ হোসেন। পরবর্তীতে বিসিসি কর্তৃপক্ষ তাকে সম্পত্তি কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং চীফ প্লানিং অফিসারের চলতি দায়িত্ব প্রদান করেন। ওইসময় তার (সানজিদ) কাজে সন্তুষ্টি হয়ে পদায়ন করে চীফ প্লানিং অফিসার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই মোতাবেক তাকে কাগজপত্রও দেওয়া হয়। এরইমধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সানজিদ হোসেনকে কোন কারণ ছাড়াই প্রথমে ওএসডি এবং পরে এক চিঠিতে চাকরিচ্যুত করে। পরবর্তীতে সানজিদ হোসেন উচ্চ আদালতের স্মরনাপন্ন হওয়ার পর আদালত নিয়োগ বাতিলের ওই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত অবৈধভাবে টাউন প্লানার পদে চুক্তিভিত্তিক লোক নিয়োগ করেন।

বৈষম্যের স্বীকার সানজিদ হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশনে পুনঃবহালের আবেদন করলে আইনি নির্দেশ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর পরই আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার পদ হচ্ছে চীফ প্লানিং অফিসার। আর ওই পদে আমাকে পুনর্বহালের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশও রয়েছে।

এ ব্যাপারে বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে কোন কিছু করবে না বিসিসি। প্রক্রিয়া অনুযায়ী যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিসিসির প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী বলেন, আদালতের বিষয়টি মেনে নেওয়া একটি অফিসিয়াল প্রক্রিয়া। যা চলমান রয়েছে। উচ্চ আদালতে স্টে থাকা অবস্থায় অন্য কাউকে ওইপদে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ৩১, ২০২৪)