একে আজাদ, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে পুনঃনির্মাণের এক বছরের মধ্যেই ভেঙ্গে গেছে এলজিইডির তত্ত্বাবধানে নির্মিত ২৮ কোটি ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকার সড়ক। জেলার বালিয়াকান্দি থেকে পাংশা হেডকোয়াটার্স পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়কের ৫০টির বেশি স্থান ধসে গেছে। সড়ক প্রশস্তকরণ ও সংস্কারকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, দুর্বল প্যালাসাইডিং ও মাটির ব্যবহার ঠিকমতো না হওয়ার কারণে এ অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

রাজবাড়ীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ সংযোগ উন্নয়ন প্রকল্পের (আরসিআইপি) আওতায় ২৮ কোটি ৪৩ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় এলজিইডি। ২০২১ সালে মীর হাবিবুল আলম ও মেসার্স আজম কনন্সট্রাকশনের রাস্তাটি পুনঃনির্মাণের দায়িত্ব দেয় এলজিইডি। নির্মাণের এ বছরের মধ্যেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধসে গেছে।

সরেজমিনে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়,বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের ঘাটিয়াগাড়া, ঘি-কমলা, নারুয়া, ঘোষপাড়া, আশুরহাট, শালমারা এলাকায় বেশ কয়েকটি স্থানে ধসে গেছে। সড়ক ধসের কারণে রাস্তা অর্ধেক হয়েছে। ধসে যাওয়া সড়ক দিয়ে বড় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ রয়েছে। ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ঝুঁকি নিয়ে চলছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বালিয়াকান্দি থেকে পাংশা হেডকোয়াটার্স সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়ক দিয়ে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, ইজিবাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে।বালিয়াকান্দি-পাংশা হেডকোয়াটার্স সড়ক ধরে কালুখালী উপজেলায় যাতায়াত করেন কয়েক হাজার মানুষ। বালিয়াকান্দি, পাংশা ও কালুখালী তিন উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতের রাস্তা বালিয়াকান্দি-পাংশা হেডকোয়াটার্স সড়ক। প্রতিনিয়ত এই সড়ক দিয়ে কৃষিপণ্য পরিবহন করেন তিন উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক।

নারুয়া ইউনিয়নের ঘি-কমলা গ্রামের বাসিন্দা মো. আনোয়ার শেখ বলেন, ‘রাজবাড়ীর বেশিরভাগ সড়ক একই ঠিকাদার কাজ করছে। আমরা রাস্তা নির্মাণের সময় বলেছিলেন এভাবে রাস্তা করলে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে। তারা আমাদের কথা শোনেনি। নারুয়া থেকে পাংশা পর্যন্ত সড়কের বেশিরভাগ স্থান ধসে গেছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।’

ইজিবাইক চালক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কের বেশিরভাগ জায়গায় ভাঙ্গা। অনেক স্থানে লাল নিশান টানানো হয়েছে। সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। রাতে সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এক বছর হয়নি রাস্তাটি সংস্কার করেছিলো সরকার। টাকাগুলোই পানিতে গেলো।’

রাজবাড়ীর স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন বলেন, ‘সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান ধসে গেছে। অতিবৃষ্টির ও সড়কের পাশে পুকুর খননের কারণে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা দ্রুত রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ নিব।’

(একে/এসপি/অক্টোবর ৩০, ২০২৪)