ফিচার ডেস্ক : মেক্সিকোর জঙ্গলে চাপা পড়ে থাকা একটি মায়া নগরীর সন্ধান মিলেছে। ‘ভ্যালেরিয়ানা’ নামে পরিচিত এই শহরে পিরামিড, খেলার মাঠ, প্রশস্ত রাস্তাসহ বিভিন্ন স্থাপনা পাওয়া গেছে। মায়া নগরীটি মেক্সিকোর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ক্যাম্পেচে রাজ্যে অবস্থিত।

শহরটির সন্ধান মেলে লিডার প্রযুক্তির মাধ্যমে। টুলেন ইউনিভার্সিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী লুক অউল্ড-থমাস তাঁর ইন্টারনেটে ডেটা ব্রাউজ করার সময় শহরটির সন্ধান পান। লিডার প্রযুক্তির মাধ্যমে জঙ্গলের নিচে থাকা বস্তুর ম্যাপ তৈরি করে তিনি ওই বিশাল প্রাচীন শহরের ছবি দেখতে পান।

৭৫০ থেকে ৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে শহরটিতে ৩০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের বসবাস করত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই হিসেবে ওই অঞ্চলটিতে বর্তমানে বসবাসকারী মানুষের তুলনায় প্রাচীন শহরটির জনসংখ্যা বেশি ছিল।

নতুন আবিষ্কৃত শহর ভ্যালেরিয়ানাকে দেখে মনে হচ্ছে, এটি কোনো রাজধানী কিংবা গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। শহরটির আয়তন ছিল প্রায় ১৬ দশমিক ৬ বর্গ কিলোমিটার এবং এর দুটি প্রধান কেন্দ্র ছিল। কেন্দ্রের ২ কিলোমিটারের মধ্যে বড় বড় ভবনও ছিল। শহরটিতে দুটি উন্মুক্ত চত্বরও ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে মায়া সভ্যতার লোকজন উপাসনা করত। এই শহরে একটি আদালতও ছিল। এ ছাড়া জলাধার থাকারও প্রমাণ পাওয়া গেছে।

লুক অউল্ড-থমাস ও অধ্যাপক মার্সেলো ক্যানুতো জঙ্গলে তিনটি আলাদা সাইট জরিপ করে বিভিন্ন আকারের ৬ হাজার ৭৬৪টি ভবন আবিষ্কার করেছেন। থমাসের মতে, মায়া সভ্যতার এত বেশি নতুন স্থাপনা আবিষ্কৃত হয়েছে যে সবগুলো গবেষণার জন্য গবেষকদের সক্ষমতা নেই। ভবিষ্যতে ভ্যালেরিয়ানা দেখার ইচ্ছা আছে বলে জানান তিনি।

গবেষকদের মতে, ৮০০ খ্রিস্টাব্দে মায়া সভ্যতার পতনের অন্যতম কারণ ছিল ঘন জনবসতি ও জলবায়ু পরিবর্তন। প্রবল খরার কারণে সেখানকার বাসিন্দারা দুর্দশার মধ্যে পড়ে এবং পরিস্থিতির চাপ সামলাতে না পেরে অঞ্চলটি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। ১৬শ শতকে স্প্যানিশ আক্রমণও মায়া নগরীর পতনের পেছনে ভূমিকা রেখেছিল।

বহু মায়া শহর এখনও অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে বলে গবেষকরা মনে করেন। লিডার প্রযুক্তির মাধ্যমে জঙ্গল আচ্ছাদিত এলাকাগুলোতে নতুন নতুন সভ্যতার সন্ধান পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।

সূত্র : ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি

(এসএস/এসপি/অক্টোবর ৩০, ২০২৪)