২০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ির মেলা শুরু কাল
মাদারীপুর প্রতিনিধি : সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে চার স্তরের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার গোপালপুরের কুন্ডুবাড়িতে শুরু হবে দুইশ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী কুন্ডুবাড়ির মেলা। বুধবার (৩০ অক্টোবর) থেকে তিন দিনব্যাপী এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর কালিপূজা ও দিপাবলী উপলক্ষ্যে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহ্যবাহী দুইশো বছরের পুরনো মাদারীপুরের কালকিনির কুন্ডুবাড়ি মেলা বন্ধ নিয়ে জেলাজুড়ে বেশ আলোচনা ও সমলোচনা শুরু। মেলা বন্ধের ব্যানারও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পরে রবিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলেম সমাজ, প্রশাসন, সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে সভা করে জেলা প্রশাসন। সবার সম্মতিতে সভা শেষে অনুমতি দেয়া হয় মেলার।
এছাড়াও গত ১৬ অক্টোবার অশ্লিলতা, চাঁদাবাজি, মাদক, জুয়াসহ ৯টি অভিযোগ এনে ব্যানার টানিয়ে মেলার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় স্থানীয় আলেম সমাজ। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইজারা বাতিল হলেও নিময় মেনেই মেলা চলবে বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন। প্রতিবছর ৫দিন হলেও এবার তিনদিন হবে কুন্ডুবাড়ির মেলা। যা শুরু হবে বুধবার (৩০ অক্টোবর) থেকে। চলবে শুক্রবার (১ নভেম্বর) পর্যন্ত।
খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে মেলাস্থল পরিদর্শন করেছেন প্রশাসন। এসময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল সেনানিবাসের কর্নেল তারিক মাহমুদ, লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মামুন, কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ, কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, মেজর মো. মুনতাসীর মামুন গৌরব, ক্যাপ্টেন আবু আমিন প্রমুখ।
মেলায় অংশ নেয়া কাঠ ব্যবসায়ি সুণেষ বলেন, আমরা প্রায় ৪০ বছর ধরে এই মেলায় আসবাবপত্র বিক্রি করার জন্য আসি। এ মেলায় কাঠের আসবাবপত্র বেশি বিক্রি হয়। ক্রেতাদের চাহিদা বুঝে বিভিন্ন ডিজাইনের আসবাবপত্র মেলায় নিয়ে এসেছি। অনেক কাঠের দোকান বসেছে মেলায়। এই মেলা ঐতিহ্যবাহী। তাই আমরা প্রতিবছরই এখানে আসি। আমাদের লাভও ভালো হয়।
কুন্ডুবাড়ির কালি মন্দিরের সিনিয়র সহ-সভাপতি স্বপন কুমার কুন্ডু বলেন, একদল মানুষ মেলা বন্ধের পক্ষে ছিলেন। পরে প্রশাসন থেকে তিনদিনের মেলার অনুমতিও দেয়া হয়। ইতিমধ্যে মেলার সকল আয়োজনও শেষ হয়েছে।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ বলেন, প্রথমে মেলা নিয়ে বির্তক সৃষ্টি হলেও সেই সমস্যা কেটে গেছে। পুজা উদযাপন কমিটি, সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে মেলা পরিচালিত হবে। মেলায় আগত দোকানী, দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করবে প্রশাসন। চার স্তরের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এই মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
(এএসএ/এসপি/অক্টোবর ২৯, ২০২৪)