রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদরের মাটিয়াডাঙা গ্রামের জাকির হোসেনকে একটি চায়ের দোকান থেকে তুলে এনে পরদিন ভোর তিনটার দিকে দামারপোতা ব্রীজের পাশে বেতনা নদীর বেড়িবাঁধের নীচে গুলি করে হত্যার দায়ে ১৬ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে নতুন করে ৩৫ জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আজ রবিবার সাতক্ষীরার আমলী প্রথম আদালতের বিচারক মোঃ সালাহউদ্দিন ১৬জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাটির তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন মামলার কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায় ২০২০ সালের পহেলা জানুয়িারি বিকেল সাতক্ষীরা সদরের মাটিয়াডাঙা বাজারের বিপ্লবের চায়ের দোকান থেকে মাটিয়াডাঙা গ্রামের কেরামত গাজীর ছেলে জাকির হোসেনকে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে। ২ জানুয়ারি বোর তিনটার দিকে তাকে দামারপোতা ব্রীজের পাশে বেতনা নদীর বেড়িবাঁধের নীচে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই আবুল কাশেম বাদি হয়ে সাবেক সাংসদ মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি, পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান,সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মীর্জা সালাহ্উদ্দিন, গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিদুল ইসলাম, শ্রমিকলীগের নেতা সাইফুল করিম সাবুসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে গত ২৯ আগষ্ট সাতক্ষীরার আমলী প্রথম আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর বাদি ত্রটিপূর্ণ মামলাটি সংশোধন করে আবারো মামলা দায়ের কথা উল্লেখ করে আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল বাদির আবেদনটি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর পাঠান্রে নির্দেশ দেন। ১১ সেপ্টেম্বর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম আদালতের আদেশসহ এফআইআরের কপি সংশ্লিষ্ট আদতালতে পাঠান।

এদিকে মামলার বাদি মূল মামলা থেকে তৎকালিন পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, সদর থানার উপপরিদর্শক হাসানুজ্জামান, সাংবাদিক মনিরুজ্জামান তুহিন কোপা মাসুদ ও ঘোনা ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন মোশার নাম বাদ দিয়ে বাকি ১১ জন ও নতুন করে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে ৩৫ জনের নামে রবিবার আমলী প্রথম আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিচারক মোঃ সালাহ্উদ্দিন এফআইআরভুক্ত মূল মামলাটির নথি থানায় ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়ে ওই মামলার তদন্তকার্যক্রম নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ২০৫ ধারার বিধান মতে নতুন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করার আদেশ দেন। একই আদেশে মামলার মূল নথি ও আদালতের আদেশের কটিটি ফেরৎ দেওয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মারাত্মক ত্রুটি বলে আদালত মনে করে বলে উল্লেখ করেন। ভবিষ্যতের জন্য থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়। আগামি ৫ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।

(আরকে/এসপি/অক্টোবর ২৭, ২০২৪)