আবীর আহাদ


মুক্তিযুদ্ধকালীন ত্রিপুরের একটা যুবশিবির পরিচালনা পরিষদের দ্বিতীয় নম্বর সংগঠক ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রায়ই বলতেন, একাত্তর সালে জনযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। এ বক্তব্যের সূত্রে একাত্তরে কি মুক্তিযুদ্ধ, না জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো, তা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সশস্ত্র যুদ্ধের সাথে সম্পর্কহীন ও সুবিধাবাদী বিশেষ এক মতলববাজচক্র একটা ধুম্রজাল সৃষ্টি করার প্রয়াস চালাচ্ছে। তারা ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে চায় যে, সেটি ছিলো জনযুদ্ধ। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজের একটা সচেতন অংশ সেটাকে মুক্তিযুদ্ধ বলে অভিহিত করেন। এসব নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যেও এর পক্ষে-বিপক্ষে একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সংবিধানের মুখবন্ধে মুক্তিযুদ্ধ বা জনযুদ্ধ স্বীকৃতি পায়নি। সংবিধানের প্রথম অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, 'মুক্তিসংগ্রামের' মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে দেশের সিংহভাগ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জনগণ জানেন যে, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা প্রাপ্ত হয়েছে। এই যে চিন্তা ও চেতনার পার্থক্য, এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসের বিকৃতি, অসংগতি ও বিভ্রান্তি ঘটে চলেছে। জাতীয় স্বার্থে এসবের অবসান ঘটা উচিত বলে মনে করি।

শুধু আ ক ম মোজাম্মেল হক নয়, অনেক জ্ঞানপাপী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে 'জনযুদ্ধ' বলে অভিহিত করেন। এটা তারাই বলেন, যাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ, অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধের সাথে কোনোই সম্পর্ক ছিলো না, যারা কোনোপ্রকার ভূমিকা রাখেননি অথবা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিলেন। ফলে মুক্তিযুদ্ধের সাফল্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের গরিমার প্রতি পরশ্রীকাতরতা ও হিংসাত্মক মনোভাব থেকে তারা বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে হেয় ও পাশ কাটিয়ে জনগণের দোহাই দিয়ে মনের ঝাল মেটানোর লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধকে 'জনযুদ্ধ' বলে থাকেন। জনযুদ্ধের প্রকৃতি এই যে, এ যুদ্ধের লক্ষ্য স্থির নয়। যে যেমন বুঝে, তেমনি যার যার আইডিওলজি বাস্তবায়নে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এ যুদ্ধে সামিল হয়। এ যুদ্ধে একক কোনো কমাণ্ড থাকে না, থাকে না কোনো সরকার ব্যবস্থা। অর্থাত্ দিকনির্দেশনাহীন যুদ্ধ, যাকে গৃহযুদ্ধ বলাই শ্রেয়। অপরদিকে মুক্তিযুদ্ধ হলো জাতীয় স্বাধীনতা অর্জনসহ আর্থসামাজিক সাংস্কৃতিক মুক্তিই যার লক্ষ্য, যা জনসমর্থিত একটি সরকার ব্যবস্থায় একক সামরিক কমান্ড দ্বারা পরিচালিত হয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় একটি সরকার ছিলো, সেই সরকারের নেতৃত্বে ছিলো সামরিক কমান্ড তথা ১১টি সেক্টরের অধীনে সুনিয়ন্ত্রিত মুক্তিবাহিনী, অতঃপর ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সমন্বয়ে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।

উপরোক্ত অবস্থায় আমার মতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে জনসমর্থিত 'মুক্তিযুদ্ধ' বলাই দার্শনিক সত্য। কারণ ১৯৭১ সালে আমরা একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে তথা জাতীয় স্বাধীনতা ও আর্থসামাজিক মুক্তির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুজিবনগর সরকারের পরিচালনায় সশস্ত্র কমান্ডের অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। জনযুদ্ধ বলা হলে বুঝায় যে, শুধুমাত্র সাধারণ মানুষ যুদ্ধ করেছেন। সব জনগণ কি মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক বা মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন? উত্তর: না। জনগণের একটা বিরাট অংশ, বলা চলে ৩০% জনগণ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ছিলো। তাদের মধ্য থেকেই কয়েক লক্ষ রাজাকার, আলবদর, আলশামস, আলমুজাহিদ, তথাকথিত শান্তি কমিটি ও দালালরা সশস্ত্রভাবে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিশেবে তারাও সারা দেশব্যাপী গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ, নারীধর্ষণসহ জঘন্যতম অপরাধ সংঘটিত করেছিলো। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বাকি জনগণ তাদেরকে নীরব ও সরব সমর্থন দিয়েছিলো। এমনকি প্রজাতন্ত্রের ৯৫% কর্মকর্তা/কর্মচারী পাকিস্তানকে সমর্থন করেছিলো। ঐ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জনগণ ছিলো ধনেজনেশক্তিতে বলীয়ান। ফলে তাদের প্রভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনগণ অনেক ক্ষেত্রে ভয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়সহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করতে পারেননি, তবে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি জনগণের বৃহত্তর অংশের নৈতিক সমর্থন ছিলো। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের দখলকৃত বা শক্তিশালী অবস্থানের এলাকার মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধ বলার সুযোগ নেই এ-কারণে যে, সাধারণ মানুষ কি রাইফেল, এসএলআর, স্টেনগান, এসএমজি, এলএমজি, মর্টার, এনারগা, কামান, গোলাবারুদ, ট্যাঙ্ক, বিমান, নৌ তথা প্রচলিত যুদ্ধাস্ত্র বা আধুনিক সমরাস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন, না দা কাঁচি খুন্তা কুড়াল ঢাল সড়কি কাতরা ত্রিফলা প্রভৃতি দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন? দখলদার পাকিবাহিনী কি জনগণের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলো, না সশস্ত্র মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলো? এ-সব প্রশ্নের উত্তর : না। তারা মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলো। ঐ-সব আধুনিক সমরাস্ত্র দিয়ে পাকিবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার লক্ষ্যে একদল অকুতোভয় যুবক দেশের বাইরে ভারতে বা দেশের মুক্তাঞ্চলে গেরিলা ও সম্মুখ সমরে লড়ার জন্য কয়েক সপ্তাহ প্রশিক্ষণ নেয়াসহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে সংহতি প্রকাশ-করা কিছু বাঙালি সামরিক বাহিনী, ইপিআর, পুলিশ ও আনসার বাহিনী 'সম্মিলিত মুক্তিবাহিনী' নাম ধারণ করে কমান্ডভিত্তিক প্রত্যক্ষভাবে সশস্ত্র যুদ্ধ করেছিলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে লড়েছিলেন, মরেছিলেন, মেরেছিলেন, আহত হয়েছিলেন। এভাবে দীর্ঘ ন'মাস জীবনপণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের শেষভাগে ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ বা সম্মিলিত কমাণ্ডের অধীনে একটা কনভেনশনাল সর্বাত্মক যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিবাহিনীকে পরাজিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিলো।

তবে একথা আমরা অকপটে স্বীকার করবো যে, বাংলাদেশের সিংহভাগ জনগণ আমাদের মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে সমর্থন করেছিলেন। প্রায় ৩০ শতাংশ জনগণের কেউ কেউ সরাসরি পাকিবাহিনীর পক্ষে, কেউ কেউ তাদের সমর্থনে চুপচাপ বসে ছিলো, যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সিংহভাগ জনগণের মধ্যকার রাজনৈতিক সচেতন একটি ক্ষুদ্রগোষ্ঠী বিশেষ করে মুক্তিবাহিনীকে যথাসাধ্য খাদ্য ও অন্যান্যভাবে সহযোগিতা করেছিলো। তবে এটাই আসল সত্য যে, আমরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুক্তিবাহিনী কমান্ড/গ্রুপ ও সামরিক বাহিনী আমাদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে ক্যাম্প স্থাপন, খাদ্য নির্বাহ, অস্ত্রশস্ত্র সংরক্ষণ, গোয়েন্দা কার্যক্রম, যুদ্ধক্ষেত্রে গমন ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে আমরা নিজেরাই সবকিছু করেছি। নদী পারাপার, ক্যাম্প স্থাপন, পরিখা খনন, অস্ত্র-গোলাবারুদ বহন ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে কিছু সাধারণ মানুষের সহযোগিতা নিয়েছি ঠিকই, তবে তাদেরকে আমরা উপযুক্ত পারিশ্রমিকও দিয়েছি। সামরিক নিয়ম-নীতি মোতাবেক আমাদের সেসময়ের জীবন আমরাই নির্বাহ করেছি। জনগণের বিরাট অংশের নৈতিক সমর্থন আমাদের উজ্জীবিত করেছে, সাহস যুগিয়েছে, এটাও সত্য। কিন্তু তাই বলে মুক্তিযুদ্ধকে তথাকথিত 'জনযুদ্ধ' বলা হলে সশস্ত্র মুক্তিবাহিনী তথা সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধাদের শৌর্য বীর্য ত্যাগ রক্ত ও বীরত্বকে অবমূল্যায়ন ও অবমাননা করা হয় ; মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করা হয়। সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদেরকে ঐ জনযুদ্ধের মাঝে গুলিয়ে ফেলা হলে 'মুক্তিযোদ্ধা' নামের স্বকীয়তা থাকে না।

দেশের ভৌগলিক স্বাধীনতা, আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে সশস্ত্র যুদ্ধের সাথে যাদের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক, তারাই মুক্তিযোদ্ধা। আর যুদ্ধকরার সঙ্গে জড়িত থাকে মারণাস্ত্র প্রশিক্ষণ ও রণাঙ্গন। তা যদি না হবে, তাহলে কেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর ৭২ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সংজ্ঞা দিলেন? সংগতকারণে বঙ্গবন্ধু সরকার প্রদত্ত সংজ্ঞাটি এখানে তুলে ধরা হলো :"মুক্তিযোদ্ধা মানে এমন একজন ব্যক্তি যিনি একটি সশস্ত্রবাহিনীর (ফোর্স) সদস্য হিশেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।" পরবর্তীতে অন্যান্য সরকারসহ আওয়ামী লীগ সরকার কেন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করেছেন, ভাতা দিচ্ছেন? মুক্তিযুদ্ধ যদি জনযুদ্ধই হবে, তাহলে কেনো সরকার এমনকি দেশের সর্বস্তরের জনগণ মুক্তিযোদ্ধাদের পৃথকভাবে মূল্যায়ন করছেন? জনযুদ্ধ হলে তো মুক্তিযোদ্ধারা 'জনযোদ্ধা' হতেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় হতো জনযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্থলে হতো জনযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট হতো জনযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ইত্যাদি।

এটাই ঐতিহাসিক সত্য যে, জনগণের বৃহত্তর অংশের সমর্থনে সর্বসাকুল্য দেড় লক্ষের মতো সশস্ত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশকে স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন যার অধিকাংশই ছিলো দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সন্তান।ঐতিহাসিকভাবে এসব বীরদের মর্যাদা সবার ওপর- তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা।

কিন্তু এটাও আমরা বেদনার সাথে লক্ষ্য করে আসছি যে, মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় মর্যাদা সাংবিধানিক আইন দ্বারা অনুমোদিত নয়, উপরন্তু বিভিন্ন সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধুর সেই মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞা পাশ কাটিয়ে নানান গোঁজামিলের সংজ্ঞায় হাজার হাজার অমুক্তিযোদ্ধা, এমনকি রাজাকাররাও অর্থ, আত্মীয়তা ও রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধা হয়েছে! এসব কারণেই আমরা একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ব্যানারে সর্বপ্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ভুয়ামুক্ত মুক্তিযোদ্ধা তালিকার দাবিতে দীর্ঘদিন যাবত আন্দোলন করে আসছি; নানান যুক্তির ধারাবাহিক লেখনী দিয়ে বিষয়গুলোকে তুলে ধরছি। দাবি বাস্তবায়িত হোক বা না হোক, সেগুলো আজ সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত মানুষের জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত প্রকৃতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছেন। জাতীয় ইতিহাসের পবিত্রতার প্রয়োজনে সরকারের উচিত, মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান ও ভুয়ামুক্ত একটি সঠিক মুক্তিযোদ্ধা তালিকা উপহার দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মহিমা চেতনাকে সমুন্নত রাখবেন।

এ লক্ষ্যে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে গত ২০ অক্টোবর আমরা একটি প্রতিনিধিদল বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীরপ্রতীকের সাথে এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞার আলোকে মুক্তিযোদ্ধা নির্ধারণের ওপর বিশদ আলোচনা করেছি। মাননীয় উপদেষ্টাও এসব ক্ষেত্রে আমাদের সাথে ঐকমত্য প্রকাশ করেছেন।

এর ব্যত্যয় ঘটলে ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করবে না। কারণ আজ যারা এ স্বাধীন দেশের বড়ো বড়ো পদে বসে আছেন সেটা তো বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও মুক্তিযুদ্ধের কারণে। এজন্যই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি না দেয়া তাদেরকে অস্বীকার করার সামিল। আর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অস্বীকার করার অর্থ মুক্তিযুদ্ধকেও অস্বীকার করা যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সম-অপরাধ। সুতরাং এটাই ঐতিহাসিক ও দার্শনিক সত্য যে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে জনযুদ্ধ নয়, 'মুক্তিযুদ্ধ' বলাই যুক্তিযুক্ত।

লেখক :মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও গবেষক, চেয়ারম্যান, একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।