শিতাংশু গুহ


দুই সম্বন্বয়ক ঘোষণা দিয়েছেন যে, দুই দিনের মধ্যে তারা বর্তমান রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগে বাধ্য করবেন এবং একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করবেন। নির্বাচিত? তা জানিনা, যেনতেন প্রকারে একজনকে বঙ্গভবনে ঢোকাবেন। সম্বন্বয়করা ঘোষণা দিয়েছেন ২২ অক্টবর, সেই হিসাবে ২৫ তারিখ রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পু’র বিদায় এবং নুতন রাষ্ট্রপতির বঙ্গভবনে প্রবেশ। কে সেই ভাগ্যবান, না দুর্ভাগা? 

বিপ্লবের পরে নাকি পাল্টা বিপ্লব হয়, মাত্র আড়াই মাসের মাথায় রাষ্ট্রপতি কি পাল্টা বিপ্লব শুরু করে দিলেন? শেখ হাসিনা’র পদত্যাগপত্র তার কাছে নাই বলে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের মাথায় বাড়ি দিয়েছেন এবং সরকার বিরোধীদের উৎসাহিত করেছেন। তিনি হয়তো অংক কষেই একটি নির্মোহ সত্য প্রকাশ করেছেন। দেশে নুতন করে সরকারের বৈধতা নিয়ে কথা উঠেছে। সর্বত্র অস্থিরতা বিরাজমান। সেনাপ্রধান তার সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরছেন।

অন্তর্বর্তী সরকার কি রাষ্ট্রপতিকে বরখাস্ত করতে পারেন? তিনি পদত্যাগ করলে বা পদত্যাগে বাধ্য করা হলে ভিন্ন কথা। দুষটু লোকেরা বলছেন, সেনাপ্রধানের সাথে প্রধান উপদেষ্টার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছেনা। এও বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার ক্ষমতা বা আইনগত ভিত্তি নেই সেনা প্রধানকে বরখাস্ত করার। মেধাবী শিক্ষার্থীরা জোর করে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করাতে সক্ষম হলেও সেনাপ্রধানকে জোর করে সরানো যাবেনা, বা সেই চেষ্টা না করাই ভাল।

সরকারের অবস্থা লেজেগোবরে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক। দেশ কে চালাচ্ছে কেউ জানেনা। এই সরকার কি আদৌ টিকতে পারবে? একটি দেশ চালাতে হলে যে পরিমান অভিজ্ঞতা দরকার, তা কারো আছে, এমনটা দৃশ্যমান হচ্ছেনা। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য আকাঁশছোয়া, সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। মানুষ কি স্বাধীনতা খাবে? ‘অটোপাশ’ নিয়ে যা হলো তা একটি জাতির জন্যে লজ্জ্বাজনক। শিক্ষার্থীদের ঘরে ঢোকাতে সরকার ব্যর্থ।

আওয়ামী লীগকে হটিয়ে এই সরকার ক্ষমতাসীন। কিন্তু এই সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের চাইতে ভাল কোনদিকে? দেশ যেদিকে যাচ্ছে, তাতে হয় নির্বাচন দিয়ে এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে, নয়তো, সামরিক বাহিনীকে ডেকে এনে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে? লোকে বলছে, সামরিক শাসন আসছে। আসলেই কি তাই? এতো তাড়াতাড়ি? সেনাপ্রধান ১৮মাস সময় বেঁধে দিয়েছিলেন, সরকার তাতে গোস্বা করেছন। ড: ইউনুস কি আদৌ ‘স্বাধীনতা’ ধরে রাখতে পারবেন?

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।