যুবককে কুপিয়ে হত্যা
সালথা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতার নামে মামলা
সালথা প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথায় মেলার মধ্যে সাথে থাকা তরুণীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কাসেম বেপারী (২৮) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে সালথা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বরকে। এ ছাড়া গট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবু জাফর মোল্যাসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সালথা থানার ওসি মোঃ আতাউর রহমান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে নিহত কাসেম বেপারী বাবা পান্নু বেপারী বাদী হয়ে ২৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহার নামীয় একজন আসামিকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমানে ভাল রয়েছে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে কাসেম বেপারী ও মিলন নামে দুই যুবক উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের জয়ঝাপ গ্রামের ইমামবাড়ি মেলা ও নৌকা বাইচ দেখতে যান। তাদের সাথে এক তরুণীও ছিল। মেলার ভেতরে কেনাকাটা সময় কাসেম ও মিলনের সাথে এক তরুণীকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন স্থানীয় জয়ঝাপ গ্রামের মুসা মোল্যার মাদকাসক্ত ছেলে বাহাদুর মোল্যা নামে এক তরুণ।
এ সময় কাসেম ও মিলন প্রতিবাদ করলে বাহাদুর ক্ষিপ্ত হয়ে তার ছোট দুই ভাইকে ডেকে আনে। পরে বাহাদুর (২৩) ও তার ভাই তৈয়াব (২০) এবং সোহেলসহ (১৮) কয়েকজন তরুণ চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কাসেম ও মিলনকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা আহত দুই জনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসকরা কাসেমকে মৃত ঘোষনা করেন। নিহত কাসেম একই ইউনিয়নের মধ্যবালিয়া গট্টি গ্রামের পান্নু বেপারীর ছেলে।
এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে বাদী পক্ষের লোকজন স্থানীয় বালিয়া বাজারে থাকা জয়ঝাপ গ্রামের মোশারফ তালুকদারের সারের দোকান থেকে মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া পাটপাশা গট্টি এলাকার হারেজ মাতুব্বর, মোফাজ্জেল, ইকরাম, ওমর মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুট করে নিয়ে যায়।
কাসেম হত্যা মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রধান আসামি ওয়াদুদ মাতুব্বরের নির্দেশে অন্য আসামিরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাসেম বেপারীকে ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
তবে ওয়াদুদ মাতুব্বর গণমাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আমি এলাকা ছাড়া। আর হত্যার ঘটনা ঘটেছে জয়ঝাপ গ্রামে। অথচ আমাদের গট্টি ও বালিয়া গ্রামের অনেক লোককে আসামি করা হয়েছে। আমাদের হয়রানি করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা দেওয়া হয়েছে। আমরা আইনিভাবে মামলা মোকাবেলা করবো।
ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা-সার্কেল) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, কাসেম হত্যার মামলা তদন্তের জন্য একজন এসআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
(এএন/এসপি/অক্টোবর ১৮, ২০২৪)