শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : শহরটি যেন শুধুই ইজিবাইকের। অদক্ষ চালক, যেখানে-সেখানে ইউটার্ন নেওয়া এবং যাত্রী ওঠানো-নামানোয় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। এতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চরম দুর্ভোগের শিকার হয় বাসিন্দারা। শুধু যানজটই নয়, ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। হচ্ছে প্রাণহানিও। দিন যত যাচ্ছে ঝিনাইদহে ইজিবাইকের সংখ্যাও তত বাড়ছে। যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে সরু সড়কে বিশৃঙ্খলভাবে ইজিবাইকের চলাচলকেই দুষছেন শহরবাসী। যানজটের দুর্ভোগ লাঘবে পৌর কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন ব্যর্থ বলেও অভিযোগ তাদের।

ইজিবাইকের ভোগান্তির হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে জেলা ট্রাফিক বিভাগ নানা কর্মসূচি হাতে নিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে ঝিনাইদহ শহরের সাধারণ মানুষ ইজিবাইকের ভোগান্তির হাত থেকে মুক্তি মিলছে না।

সাধারণ মানুষ বলছে, শহরে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি ইজিবাইক চলাচল করছে। এসব ইজিবাইকগুলোর সংখ্যা হবে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো। অপ্রাপ্তবয়স্ক-অদক্ষ ইজিবাইক চালকদের কারণেই সড়কে যানজট হচ্ছে। ঘটছে ছোট-বড় অনেক দুর্ঘটনা।

ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার তথ্যমতে, শহরে ইজিবাইকের সংখ্যা দুই হাজারের মতো। যানজট কমাতে পৌরসভা থেকে লাইন্সেস অনুমোদন করা হচ্ছে এসব ইজিবাইকের অনুকূলে। শহরের ভেতর যে ইজিবাইকগুলো দেখা যায় তার অধিকাংশই অন্য উপজেলা থেকে শহরে এসে ভাড়া খাটে। যার ফলে বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

জানা গেছে, শহরের প্রাণ কেন্দ্র পায়রা চত্বর, এইচএসএস সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, মুজিব চত্বর, হাটের রাস্তাসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রতিনিয়ত দেখা যায় ইজিবাইকের যানজট। এই যানজট নিরসনে সড়কে ট্রাফিক পুলিশ লাগাতার চেষ্টা করলেও ইজিবাইকের দৌরাত্ন্যে তারাও ক্লান্ত হয়ে পড়ে অনেক সময়।

ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসমিন জানান, ‘হামদহ এলাকা থেকে তার স্কুলে আসতে সময় লাগে দশ মিনিট। কিন্তু ইজিবাইকের যানজটে পথে রিকশায় বসে থাকতে হয় বিশ মিনিট।’

রাস্তার পাশে চা ও ডাব ব্যবসায়ী সলেমান মিয়া বলেন, ‘ইজিবাইকগুলো দিন দিন সড়কে বেপরোয়া ভাবে চলাচল করছে। চলতি পথে হঠাৎ করেই রাস্তার পাশে দাড়িয়ে পড়ে এসব ইজিবাইক। ইজিবাইকের যানজট কমাতে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে নিশ্চুপ বসে রয়েছে।’

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের ট্রাফিক পরিদর্শক মসিউর রহমান জানান, ‘অদক্ষ চালকের কারণে ইজিবাইকে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। দিন দিন ইজিবাইকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে যানজট কমানো এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত চালক ইজিবাইক চালালে দুর্ঘটনা কম হবে বলে মনে করেন তিনি।’

(এসআই/এসপি/অক্টোবর ১৬, ২০২৪)