কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারী প্রাণী সম্পাদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকা কালিন ডা. আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতা ও উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় নদীবিধৌত চরাঞ্চলে উন্নয়ন প্রকল্প লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর (এলএফএফ) পদে কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। তবে ময়না ইউনিয়নের নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মী মো. আনোয়ার হোসেনের নিয়োগে স্বেচ্ছাচারিতা ও অর্থ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর কর্মী পদে ১৪ জুলাই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ২২ তরিখে পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

তবে এ পদে নিয়োগে কিছু শর্তের ব্যত্যয় ঘটেছে। শর্তের ৪ নং অনুচ্ছেদে লেখা রয়েছে "কোন প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোন প্রকল্পে কর্মরত কর্মচারী স্বেচ্ছাসেবক কিংবা ছাত্র ছাত্রীকে লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর কর্মী পদে নিয়োগ দেয়া যাবেনা"। ময়না ইউনিয়নের নিয়োগ পাওয়া লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর আনোয়ার হোসেন বেঙ্গল গ্রুপের এমআর পদে চাকুরী করেন। তবে কেমনে তিনি এ পদে নিয়োগ পেয়েছেন ? জানা গেছে, ডা. আব্দুল আলিম উপজেলার প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকাকালিন আনোয়ারের সাথে ঘনিষ্ঠতা থাকার কারণে উৎকোচ নিয়ে এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি বেঙ্গল কোম্পানিতে চাকরি করি ঠিক আছে, তবে পাশাপাশি লাইভস্টক ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর হিসাবে কাজও করি। প্রকল্প থেকে আমাদের প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা ভাতা দেয়া হবে। তবে এ টাকায় আমার কিছু হবে না। আর আমি কোন প্রকার টাকা দিয়ে চাকরি নেইনি। আমার সাথে আলিম স্যারের ভালো সম্পর্ক আছে এটা সঠিক । কেননা আমার বেঙ্গল কোম্পানির কাজই তাঁর সাথে। একজন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে ডাক্তারের সাথে সুসম্পর্ক থাকতেই পারে।

সাবেক উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও বর্তমান ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আব্দুল আলিম বলেন, চাকরী প্রার্থীর ৩০-৪০ বছর বয়সী হতে হবে । তবে এ পদে মাত্র ১০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হবে। এ বেতনে আর একজনের সংসার চলে না। এজন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে এ পদে চাকরি দেয়া হয়েছে। এর বিনিময় কোন প্রকার উৎকোচ নেয়া হয়নি। এ পদে অন্য উপজেলায় নিরাপত্তা কর্মী, ও ইলেক্ট্রিশিয়ান ও নিয়োগ পেয়েছে। তারা কিভাবে নিয়োগ পেল। তারাও ৫ দিনের ট্রেনিং দিয়েছে। আমি এটুকু চেয়েছি যে এর আগে যেসব প্রজেক্টে কর্মী নিয়োগ হয়েছে। তারা ভালো ছিল না। এবার যে ছেলেটা নিয়োগ পেয়েছে সে অনেক ভালো।

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, আমার দায়িত্ব ছিল ভাইবা নেয়া। ওই ছেলেটা উত্তীর্ণ হয়েছিল। তবে সে কি কাজ করতো আমার জানা ছিলনা। সে যদি তাঁর পেশার কথা গোপন রাখে আমি কেমনে বুঝবো। সে সময় ভারপ্রাপ্ত প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ছিলেন ভেটেরিনারি সার্জন মো. আব্দুল আলিম। তাঁর সাথে চাকরি প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের ঘনিষ্ঠতা আছে কিনা জানিনা। তবে সে জানলেও আমাকে না বললে আমি কিভাবে জানবো। যদি নিয়মবহির্ভূত নিয়োগ হয়ে থাকে তথ্য প্রমাণ পেলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(কেএফ/এসপি/অক্টোবর ১৬, ২০২৪)