তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক আওয়ামী লীগ নেতার নামে করা ধর্ষণ মামলায় নারীকে সহযোগিতা করছেন সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম আফ্রিদি। তিনি দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি। ধর্ষণের শিকার ওই নারী সাংবাদিক রফিকুলের আপন মামি। তাই তিনি তাকে মামলা পরিচালনা করতে সহযোগিতা করছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই আওয়ামী লীগ নেতার চাচাতো ভাই তাকে  হত্যার হুমকি দিয়েছেন। 

প্রথমে হাত-পা ভাঙ্গার হুমকি পেয়ে টুঙ্গিপাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন সাংবাদিক রকিবুল । জিডির খবর অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা জানতে পারলে তার চাচাতো ভাই জিকরুল মুন্সিকে দিয়ে ওই সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেন।

এ ঘটনায় সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম গত ১৫ অক্টোবর গোপালগঞ্জ সেনা ক্যাম্পে বর্নি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাদশা ও তার চাচাতো জিকরুল মুন্সীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগ বলা হয়েছে, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বর্নি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাদশার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন সাংবাদিক রকিবুলের আপন মামী। মামলায় তিনি তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন। একারণে সাংবাদিক অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার শত্রুতে পরিণত হয়। গত ১০ অক্টোবর আওয়ামী লীগ নেতা বাদশার চাচাতো ভাই জিকরুল মুন্সী (৩০) সাংবাদিক রকিবুলের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার জন্য গোপালগঞ্জের একটি সন্ত্রাসী বাহিনীকে ভাড়া করেন। এ সংক্রান্ত একটি ফোন কল রেকর্ড সাংবাদিক রকিবুলের হাতে আসে। এ ঘটনার পর জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে টুঙ্গিপাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-৩৩৯) করেন ওই সাংবাদিক। জিডির কথা আওয়ামী লীগ নেতা ও তার চাচাতো ভাইয়ের কানে গেলে গণমাধ্যম কর্মী রকিবুলকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন তারা।

সাংবাদিক রকিবুল ইসলাম আফ্রিদি বলেন, আমার আপন মামী গোপালগঞ্জ জজ কোর্টে ওই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। আমি তাকে মামলা পরিচালনা করতে সহযোগিতা করছি। তাকে সহযোগিতা না করার জন্য আমাকে কয়েকবার হুমকি দেয় জিকরুল। আমি তার কথায় কর্ণপাত করিনি। তাই আমাকে মারপিট করতে এবার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করেছে। এমন একটি ফোন কল রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে। জিকরুল মুন্সী ও তার চাচাতো ভাই বর্নি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাদশার হুকুমে এগুলো করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই গণমাধ্যম কর্মী।

রকিবুল আরো বলেন, জিকরুল মুন্সি ২০১৩ সালে এক যুবককে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে রাতের অন্ধকারে গুলি করে হত্যা করেছিলো। এরপর থেকে তিনি বেশ কয়েক বছর পলাতক ছিলেন। তখন তার বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র মামলা দায়ের করা হয়। এখন আবার এলাকায় ফিরে এসে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করেছে। তাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে টুঙ্গিপাড়া থানায় ও গোপালগঞ্জ সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করেছি।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা বাদশা ও তার চাচা ভাই জিকরুল মুন্সির মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাদের নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম বলেন, সাংবাদিককে হুমকির ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে পরাবর্তী প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ১৬, ২০২৪)