অমর ডি কস্তা, নাটোর : নাটোরের বড়াইগ্রামে অতিরিক্ত মদ পানে মারা গেছে নববিবাহিত এক যুবক। অপরদিকে মৃত স্বামীকে দেখতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন স্ত্রীসহ তার স্বজনেরা। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার জোনাইল বাগডোব গ্রামের মন্ডলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে মৃত স্বামীকে না দেখেই ফিরে যেতে বাধ্য হন স্ত্রীসহ স্বজনেরা।

নিহত ওই নববিবাহিত যুবকের নাম জয়ন্ত মন্ডল (২৫)। সে উপজেলার জোনাইল বাগডোব গ্রামের প্রভাত মন্ডলের ছেলে। গত প্রায় ৬ মাস আগে পেশায় ব্যবসায়ী জয়ন্তের বিয়ে হয় নাটোর শহরতলীর হাজরা এলাকার শ্যামল রায়ের মেয়ে শতাব্দী রায় এর সাথে। বিয়ের পর থেকেই শতাব্দী তার বাবার বাড়িতেই অবস্থান করে আসছিলো।

জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলন মন্ডল জানান, রোববার বিকেলে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে জয়ন্ত তার শ্বশুর বাড়িতে যায় এবং সেখানে সে মদ পান করে। এতে সে অসুস্থতা বোধ করলে রাতেই জয়ন্ত তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসে। পরে সে আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনেরা তাকে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক আল মাসুদ বিষাক্ত মদ পানে জয়ন্তের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জয়ন্তের স্ত্রী শতাব্দী জানান, হাসপাতাল থেকে মরদেহ আনার পর সন্ধ্যায় আমার মা-বাবা সহ ১৪-১৫ জন স্বজন জয়ন্তের বাড়িতে গেলে জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলনসহ বেশ কয়েকজন আমাদের উপর চড়াও হয় এবং লাঠি ও বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সবাইকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে মিলনের সাথে যোগাযোগ করে মারপিটের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ভাইকে তার স্ত্রী শতাব্দী ও শ^শুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে মদ খাইয়ে মেরে ফেলেছে। এই মৃত্যুর জন্য তারাই দায়ী। অপরদিকে শতাব্দীর অভিযোগ, জয়ন্তের জ্যাঠাতো ভাই মিলনই তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ী। কারণ, তার স্বামীকে চিকিৎসা করাতে সে গাফলতি করেছে।

বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, জয়ন্তের মৃত্যুর বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। জয়ন্তের মৃত্যু বা শতাব্দী সহ তাদের স্বজনদের মারপিটের ঘটনায় কেউ কোন লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দেয়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এডিকে/এসপি/অক্টোবর ১৫, ২০২৪)