সরদার শুকুর আহমেদ, বাগেরহাট : ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ অমর এই গানের স্রষ্টা তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্তপ্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৬৮তম জন্মবার্ষিকী আগামীকাল বুধবার। 

বাংলাদেশের কবিতায় অবিসস্মরণীয় এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম সেরা কবি-স্বীকৃতি। ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান। চলতি বছর তিনি মরনোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন।

দিনটির স্মরণে বাগেরহাটের মোংলায় কবির নিজ গ্রামের বাড়ি মিঠেখালিতে সকালে রুদ্র স্মৃতি সংসদ কবির কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল, দোয়া এবং রুদ্র স্মরনানুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। স্মরণসভা শেষে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাপীঠে অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্যে দিনব্যাপী স্বাস্থ্যক্যাম্প পরিচালিত হবে।

অকালপ্রয়াত এই কবি নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে। সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্যচেতনা ও অসাম্প্রদায়িকতার উজ্জ্বল তার কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন ‘দিন আসবেই দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীকে। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রানন্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।

মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে এই কবি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন।

(এস/এসপি/অক্টোবর ১৫, ২০২৪)