একে আজাদ, রাজবাড়ী : মৌসুম শুরুর আগেই এ বছর রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় প্রায় আড়াই হাজার টন আগাম শীতকালীন সবজি উৎপাদন হচ্ছে হলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকরা ১৫-২০ কোটি টাকা আয় করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি শীত মৌসুমে উপজেলায় ৩৮৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বাজারে পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় মৌসুম শুরুর পূর্বেই এ অঞ্চলের সহস্রাধিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অগ্রসর কৃষক শীতকালীন আগাম সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েন।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, উপজেলায় ১০০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, শিমসহ বিভিন্ন জাতের এই আগাম সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে জামালপুর ইউনিয়নের মাশালিয়া, নটাপাড়া, লক্ষণদিয়া এলাকায় উল্লেখযোগ্য আবাদ হয়েছে। এসব সবজির মধ্যে ফুলকপি ও বাঁধাকপির আবাদ উল্লেখ করার মতো।

নটাপাড়ার কৃষক রুবেল মোল্লা জানান, মাত্র ১৪ শতাংশ জমিতে ফুলকপি আবাদ করতে তার প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮০ হাজার টাকার কপি বিক্রি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে অতিবৃষ্টির কারণে তার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান এই কৃষক।

একই এলাকার কৃষক অজিৎ প্রামাণিক জানান, প্রতি বিঘা জমিতে আগাম সবজি চাষে ৩৫-৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আর উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তবে এ বছর বৃষ্টির কারণে কৃষকের আয় প্রায় ২৫ শতাংশ কমে গেছে।

কৃষক নিহার প্রামাণিক জানান, আগাম সবজি চাষের কারণে মূল মৌসুমের সবজি আবাদে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে না। কারণ আগাম আবাদের জন্য তারা তিন মাস আগ থেকেই বীজতলা তৈরিসহ জমির আনুষঙ্গিক পরিচর্যা শুরু করেন। এ কারণে আগাম সবজি আবাদের পরও কৃষকরা আরো দুই দফা একই জমিতে সবজি আবাদের সুযোগ পেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে তিনি আর্থিক প্রণোদনা বাড়ানোর দাবি করেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, আগাম সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণসহ প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।
সরেজমিন মাঠ পরিদর্শনকালে বালিয়াকান্দি

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বছর শীত মৌসুম শুরুর পূর্বেই বালিয়াকান্দি উপজেলায় যে পরিমাণ ফুলকপি ও বাধাকপিসহ আগাম সবজি চাষ হয়েছে, তাতে অন্তত আড়াই হাজার টন সবজি উৎপাদিত হবে। এই সবজির বিক্রয় মূল্য হবে ১৫-২০ কোটি টাকা।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, বৃষ্টির কারণে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে উঠতে পারলে ভরা শীত মৌসুমে এবারকার উৎপাদন দ্বিগুণ হবে।

(একে/এএস/অক্টোবর ১১, ২০২৪)