১০ অক্টোবর, ১৯৭১
বিশ্ব জনমত বাংলাদেশের পক্ষে : সরদার শরণ সিং
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণ সিং নয়াদিল্লিতে বলেন, বিশ্ব জনমত বাংলাদেশের পক্ষে। শরণার্থীদের জন্য বিদেশী সাহায্য বাংলাদেশ সঙ্কটের রাজনৈতিক সমাধান দেবে না। বাংলাদেশ সরকারের রাজনৈতিক সমাধানের অর্থ হবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান।
সিলেটের কুলাউড়ায় মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের বিরুদ্ধে এক অভিযান চালায়। এই অভিযানে পাকবাহিনীর ৫ জন সৈন্য নিহত হয়। পরে দু‘জন রাজাকার অস্ত্রশস্ত্রসহ মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
৮নং সেক্টরের বায়রা সাব-সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পাকসেনাদের এক প্লাটুন সৈন্যকে এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে ৪ জন পাকসেনা নিহত ও ২ জন রাজাকার বন্দি হয়।
৮নং সেক্টরের গোজাডাঙ্গা সাব-সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর মাধবকাঠি ঘাঁটির ওপর তীব্র আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ৩০ জন সৈন্য নিহত ও ২০ জন আহত হয়। অপরদিকে একজন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।
টাঙ্গাইলে কাদেরিয়া বাহিনী চারাবাড়ি ও পোড়াবাড়ি ঘাট নিরাপদ করার লক্ষ্যে পোড়াবাড়ির একমাত্র পাকা সড়কের বড় সেতু ও পাশের আর একটি সেতু ধ্বংস করে। সন্তোষে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর বাড়ি সংলগ্ন এই সেতুটি এবং কিছু দূরের বেলতা সেতু ধ্বংস করে দেয়ার পর উক্ত এলাকা পাকহানাদার মুক্ত হয়।
যমুনা নদীতে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর একটি গানবোটের ওপর দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। এই অভিযানে পাকসেনাদের গানবোটটি বিধ্বস্ত হয়ে পানিতে ডুবে যায়।
মিয়া মাহমুদ আলীর কাসুরীর নেতৃত্বে পিপলস পার্টির একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরে আসেন। ঢাকায় এসে মিয়া মাহমুদ আলী কাসুরী সাংবাদিকদের জানান, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব জোরদার করার জন্যই তিনি ঢাকা এসেছেন। এই প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে ভুট্টো পূর্ব পাকিস্তানবাসীর উদ্দেশ্যে বাণী পাঠান। বাণীতে ভুট্টো বলেন, জাতির জীবনে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করতে হবে। ভারত ষড়যন্ত্র করে পাকিস্তানিদের দিয়ে পাকিস্তানিদের হত্যা করছে। এজন্যে তারা এক শ্রেণীর সমাজবিরোধীদের কাজে লাগাচ্ছে। ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
সিলেটের ছাতক বাজারে স্বাধীনতা বিরোধীদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিলেট জেলা শান্তি কমিটির আহ্বায়ক ও মুসলিম লীগ নেতা শহীদ আলী বলেন, জাতি আজ এক মহা পরীক্ষার সম্মুখীন। দেশকে বাঁচাতে হলে প্রতিটি দেশ প্রেমিককে সংঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের নিতে হবে।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/অক্টোবর ১০, ২০২৪)