সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ‘গুণী শিক্ষক’ সম্মাননা পেলেন রায়হানা হক। রায়হানা হক কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার বাঁশগাড়ি ১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

৫ অক্টোবর শনিবার বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে নির্বাচিত শিক্ষকদের মাঝে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদুজ্জামান মাহমুদ মনোনীত শিক্ষকদের হাতে এই সম্মাননা ও ক্রেস্ট তুলে দেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ, ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের প্রধান ড. সুসান ভাইস প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ।

সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জাতীয়ভাবে সম্মানিত করা হয় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১১ জন গুণী শিক্ষককে। এর মধ্যে স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, বুয়েট ও কৃষি ইউনিভার্সিটি শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ জন শিক্ষক হিসেবে উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ের ধাপ পেরিয়ে প্রায় ৪ লক্ষ শিক্ষকদের মাঝে নির্বাচিত হন ভৈরব উপজেলার বাঁশগাড়ি ১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রায়হানা হক।

রায়হানা হক এর পিতার চাকুরি সূত্রে সুনামগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার ফজলুল হক ও মাতা আনোয়ারা হক। তবে রায়হানা হক এর দাদার বাড়ি অর্থাৎ পিতার আদি নিবাস হল কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার শিবপুর সরকার বাড়ি। তিনি ১৯৯৯ সালে ৬ ডিসেম্বর চাকুরীতে যোগাদান করেন। তিনি এর আগেও সিলেট বিভাগের ২০১১ সালের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি জাইকা থেকে জাপান, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হয়ে থাইল্যান্ড, মাইক্রোসফট থেকে সিংগাপুর, স্কুল এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম এ ইন্ডিয়া ও ভিয়েতনাম ট্রেনিং করেছেন।

রায়হানা হক ২০২৩ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার জয়িতা নির্বাচিত হন। তাছাড়া ২০১৭ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। শিক্ষক বাতায়ন পোর্টাল থেকে তিনি ২০১৭ সালে সেরা কন্টেন্ট নির্মাতা, ২০১৮ সালে জাতীয় পর্যায়ে কন্টেন্ট প্রতিযোগিতায় সেরা ১৫ নির্বাচিত হয়েছেন। ২০২২ সেরা নেতৃত্ব শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিকভাবে ইন্ডিয়ার মোগো ফাউন্ডেশন এওয়ার্ড পেয়েছেন ২০১৮ সালে। ২০১৮ সালে মাইক্রোসফট ঊ২ প্রোগ্রাম থেকে লেসন প্লান উইনার হয়েছেন ও ২০২২ সালে মেটা মাইন্ড প্রজেক্ট ঊ২ অনলাইনে উইনার হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে একমাত্র স্কাইপ টিচার নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি গ্রামীণ ফোনের ব্রান্ড এম্বাসাডর ও ওঈঞ৪ঊ এম্বাসাডর ও ঞবধপয ঝউঝ এম্বাসেডর এবং ন্যাশনাল জিও গ্রাফির সার্টিফাই টিচার। তিনি শিশুদের জন্য নতুনত্ব নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। তাই আইসিটি প্রেমি শিক্ষক হিসেবে করোনা কালিন অধিদপ্তর থেকে পরিচালিত ঘরে বসে শিখি ও অন্যান্য পেইজে প্রায় ১৪৭টি লাইভ ক্লাস নিয়েছেন।

রায়হানা হক বলেন, এ সম্মাননা স্মারক পেয়ে একজন শিক্ষক হিসেবে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। শিক্ষকের সামাজিক মর্যাদা, আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে পারলে শিক্ষায় ইতিবাচক বিপ্লব সূচিত হবে। আমি বিশ্বাস করি এমন উদ্যোগ শিক্ষকগণকে উজ্জীবিত,অনুপ্রাণিত করবে।

তিনি আরও বলেন, অসংখ্য গুণী শিক্ষকদের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে সত্যিই সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

(এসএস/এএস/অক্টোবর ০৯, ২০২৪)