কৃষিঋণ মওকুফসহ বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান মৌলভীবাজারের কৃষক-মৎসজীবীরা
মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : ২০ হাজার টাকার কৃষিঋণ মওকুফ, এর অধিক টাকার কৃষিঋণের সুদ মওকুফ, বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক প্রদান এবং বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধান সহ কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলনের ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবীতে মৌলভীবাজারে কৃষক সমাবেশ ও অর্থ উপদেষ্টা, কৃষি উপদেষ্টা এবং পরিবেশ উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় কৃষক ও মৎসজীবী সমাবেশ।
কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আ স ম ছালেহ সোহেল এর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব খছর“ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কৃষক-মৎসজীবী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি বদর“ল হোসেন, প্রবীণ সাংবাদিক সরওয়ার আহমদ,সিলেট জেলা বারের বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট হুমায়ুন রশিদ সুয়েব, বাপা নেতা শিব প্রসন্ন ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ বন্যায় মৌলভীবাজার জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। আমন ফসল হারিয়ে সর্বশ্রান্ত কৃষক। কারো কারো ঘরবাড়িও ধবংস হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলায় ফি-বছর বন্যার কারণ শুধু প্রাকৃতিক নয় এর প্রধান কারণ হলো মানবসৃষ্ট। অপরিনামদর্শী লুটেরা উন্নয়ন, অংশীজনের মতামত না নিয়ে, ক্ষেত্রবিশেষে প্রচলিত বিধিবিধানের তোয়াক্কা না করে হাওর-বিল-নদী ইজারা ও ভরাট -দখল, দূষণে আমাদের প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস এবং মনু নদ শাসন ও খননের বরাদ্দ লাগাতার লুটপাট, এসবই দায়ী। ইতিপূর্বে ভূমি খেকো শিল্পপতিগণ হাওরের কয়েক হাজার একর কৃষিজ জমি কিনে নিয়েছেন। শুনা যাচ্ছে হাওর ভরাট করে, প্রাণ-প্রকৃতি বিনষ্ঠ করে নানাধরণের শিল্পকারখানা হবে। কৃষক-মৎসজীবীদের মধ্যে এসব বিষয়েও আতংক রয়েছে। যে কারণে আমরা কাউয়াদিঘী হাওর রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে দীর্ঘদিন থেকে জনগণের অধিকার রক্ষার সংগ্রাম জারি রেখেছি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রান্তিক, বর্গাচাষী ও মৎসজীবী সম্প্রদায়ের কৃষকের অবদান উল্যেখযোগ্য। যে কারণে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের দাবিগুলো সরকারের মেনে নেওয়া উচিত।
সমাবেশে বক্তারা ২০ হাজার টাকার কৃষিঋণ মওকুফ,২০ হাজারের অধিক পরিমাণ কৃষিঋণের সুদ সম্পূর্ণ মাফ, ব্যুরো মৌসুমের আগে বিনামূল্যে সার বীজ কীটনাশক প্রদান,জেলার বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের আন্ত-দাপ্তরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নযোগ্য,কাউয়াদিঘী হাওর সহ জেলার সকল হাওর, হাওরের প্রাকৃতিক খাল-ছড়া-নদী এবং মনু নদী, কুশিয়ারা ও ধলাই নদী খনন সহ বিগত অর্থ বছরে স্বৈরাচারী সরকারের আমলে মনু নদী খন, নদী শাসনের বরাদ্দকৃত টাকার হরিলুটকারীদের বিচার ও শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা,হাওরে মিঠাপানির মাছের অভয়াশ্রম তৈরি করা সহ ২০ টি দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি প্রতিনিধি দল মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বর্তমান অর্šÍবর্তী সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
(একে/এসপি/অক্টোবর ০৭, ২০২৪)