মোঃ সিরাজ আল মাসুদ

স্বাধীনতা-
তোমার তপ্ত হাতের চাবুকে চাবুকে
আমাকে রক্তাক্ত করে দাও।
তোমার চোখ রাঙিয়ে
কথা বলার ধরন টা সহ্য করছি জন্ম থেকেই।
তুমি বিভাজন করো -
বিভাগ থেকে জেলা
জেলা থেকে উপজেলা
উপজেলা থেকে ইউনিয়ন
আর ইউনিয়ন থেকে পাড়া-মহল্লা।
বৈষম্যর গ্যাঁড়াকলে -
একটি দেশ হারিয়ে যায়।
কলার খামছে ধরে
বলে-'ব্যাটা, তোর বাড়ি কোথায়? '

চেয়ে দেখি কিছু দানব
মুখের কথায় ছুরি চালায়।

সীমাহীন স্বাধীনতা
সবজি দোকানীর হাতে,
মুদির দোকানে।
আজ মুদিখানার মালিক
কর্তাসেজে দুকলম লিখে
জারজ কাগজে,
বলে -'পাঁচ হাজার সাতশত চুয়াল্লিশ টাকা।'

মাছের বাজারে
দু'পায়ের হেটে চলবার রাস্তায় ভীড় জমে,
অমুক বিলের, অমুক নদীর
একদাম।
পরিবারের মহান পুষ্টিদাতা
হাস্য মুখে দাপট সহ্য করে।
মেজাজ বিগড়ে
তবু সহাস্যে বাড়ী ফিরে।

যানজটে অতিষ্ঠ রিকশাওয়ালা
ষোড়শী রমণীর সামনে
উদোম বুলি ছুড়ে
আরোহী ভয়ে, লজ্জায়
দরকষাকষি না করে
চোখমুখ ঢেকে গলির পথ ধরে।

বড় বড় কাগজে লিখে
বড় বড় গাধা,
অযোগ্যদের হাতে ক্যামেরা, মাইক্রোফোন
গাড়ীর সামনে বড় করে স্টীকার সাঁটানো
তলানির গল্প বিক্রি হয়
২ শত থেকে ২ লাখে বা ২ কোটিতে,
সস্তা গল্প কিনে
কালো টাকাকে সাদা করে একদল লুটেরা ।

স্বাধীনতা তুমিতো বারবার আসো -
লাল কার্পেটের গালিচায় পা দিয়ে,
তোমার আগমনে
শেফালী বেগমরা ভাবে -
এই বুঝি বেকার ছেলেটা চাকর হবে
জনগণের চাকর।
লাল কার্পেটে কাঁদামাখে
একদল শিক্ষিত অমানুষ,
কলমের প্যাঁচে আটকে পরে
'স্বাধীনতা' নামক শব্দটি।

এবার উদ্ধারে ডাক পরে
মুক্তিকামী জনতার,
যাদেরকে স্বাধীনতা -স্বাধীনতা
বলে দীর্ঘ বাহান্ন বছর ঠকিয়েছে একদল।
দুদিনেই মিটে যায়
জালা মরে যায়
পা পিছলে উবু হয়ে পরে
ঠকে যাবার দল।
দ্ব্যর্থহীন ভাষার বলে উঠে
আমরা মানুষ ছিলাম কবে?