মন্ত্রীদের নাম ভাঙিয়ে দিতেন চাকরির প্রলোভন, মহিলা লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ প্রভাবশালী এমপি ও মন্ত্রীদের সাথে ছিলো তার গভীর সম্পর্ক। তাদের সাথে একাধিক ছবি তুলে তা ছড়িয়ে দেওয়া হতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
নিজের আপন বোন এবং কতিপয় ব্যক্তির মাধ্যমে শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করে গ্রামের সবাইকে বোঝাতেন মন্ত্রী ও এমপিদের সাথে নারী নেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার মুনের খুব ভাল সম্পর্ক রয়েছে। এরপরেই জেলার সর্ববৃহত উপজেলা বাকেরগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামের সহজ সরল যুবকদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। চাকরিতো দিতেই পারেননি উল্টো টাকা চাইতে গেলে ভূক্তভোগীদের শারিরিক নির্যাতন করে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেওয়া হতো। যেকারণে এতোদিন কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাননি।
এবার ওইসব ভূক্তভোগীরা একত্রিত হয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উল্লেখিত অভিযোগ করেছেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের আফালকাঠি গ্রামের গিয়াস উদ্দিন মৃধার কন্যা ফেরদৌসী মজুমদার মুনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ফেরদৌসী মজুমদার মুন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী মহিলা লীগের সদস্য এবং ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানার সহ-সভাপতি।
বাকেরগঞ্জ প্রেসক্লাবে বুধবার দিবাগত রাতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেছেন মো. সুমন মৃধা। এসময় মো. জুলফু মিয়া, মো. সালাউদ্দিন, মিজানুর রহমান, মামুন সিকদার, রাসেল সিকদারসহ একাধিক ভূক্তভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, মন্ত্রী ও এমপিদের সাথে ছবি তুলে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে পুরো বাকেরগঞ্জে রাম রাজত্ব কায়েম করেছে অভিযুক্ত নারী নেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার মুন। নিজ এলাকা আফালকাঠি গ্রামে প্রতারনার জন্য তৈরি করা সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে ছিলেন ফেরদৌসী মজুমদার মুনের আপন বড় বোন হেলেনা মজুমদার। নলুয়া ইউনিয়নের কারখানা নদীর চর দখলসহ এলাকার অসহায় পরিবারগুলোর জমি দখল ছিল ওই সিন্ডিকেটের প্রধান কাজ। ফেরদৌসী মজুমদার মুনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি তার সৎ ভাই সুমন, সুজন, মিঠু মজুমদারসহ সৎ বোন লাভলী আক্তার। ক্ষমতার দাপটে তাদের জমিজমা দখল করে নিয়েছেন ফেরদৌসী মজুমদার মুন ও তার বোন হেলেনা।
সংবাদ সম্মেলনে আফালকাঠি গ্রামের নুরু মুন্সি অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক লাখ টাকা নিয়েছেন ফেরদৌসী মজুমদার মুন। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাকির হাওলাদার ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইমরান আলী মৃধার কাছ থেকেও দুই লাখ টাকা নিয়েছেন চাকরি দেওয়ার নামে। এছাড়াও উপজেলার অসংখ্য যুবকদের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী। এছাড়াও প্রতিবেশী সুমন মৃধার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে ফেরদৌসী মজুমদার মুন ও তার বোন হেলেনা মজুমদারের বিরুদ্ধে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর পরই আত্মগোপনে চলে যায় ফেরদৌসী মজুমদার মুন। ভূক্তভোগীরা উল্লেখিত অভিযোগগুলোর তদন্ত করে ফেরদৌসী মজুমদার মুন ও তার বোন হেলেনা মজুমদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
(টিবি/এএস/অক্টোবর ০৩, ২০২৪)