তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ জেলার মোট প্রবীনের সংখ্যা ৮৭ হাজার ৭৬৫ জন। এরমধ্যে ১৪ হাজার ৯৭৩ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও উচ্চবৃত্ত। তারা বয়স্কভাতা পাওয়ার যোগ্য নয়। বয়স্ক ভাতা পাওয়ার উপযোগি ৭৪ হাজার ১৭১ জনের সবাই বয়স্ক ভাতা পান। সেই হিসাবে গোপালগঞ্জ জেলার শতভাগ প্রবীণ বয়স্কভাতা পাচ্ছেন। ভাতার টাকা দিয়ে প্রবীণরা চিকিৎসার ঔষুধ  ও পছন্দের খাবার ক্রয় করে থাকেন। ভাতার টাকা তাদের জীবনে কিছুটা হলেও স্বাচ্ছন্দ এনে দিয়েছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ জুলফিকার আলী আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রবীণ দিবসের মূল বক্তব্যে এসব তথ্য উপস্থাপন করেন।

সহকারী পরিচালক আরো বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ১৭ হাজার ৯৯৬ জন প্রবীণ, কাশিয়ানী উপজেলায় ১২ হাজার ৯৩২ জন প্রবীণ, কোটালীপাড়া উপজেলায় ১৬ হাজার ৬৯০ জন প্রবীণ, মুকসুদপুর উপজেলায় ১৮ হাজার ৫১০ জন প্রবীণ ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় ৬ হাজার ৬৬৪ জন প্রবীণ বয়স্কভাতা পান।

ভাতা পাওয়ার জন্য নারীদের ৬২ বয়সোর্ধ্ব ও পুরুষ ৬৫ বয়সোর্ধ্ব নির্ধারণ করেছে সরকার। ১ জন প্রবীণ নাগরিক প্রতি মাসে মাসে ৬০০ টাকা করে ভাতা পান। ৩ মাস পরপর এ ভাতা প্রদান করা হয় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

মোঃ জুলফিকার আলী আরো বলেন, ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনা অনুযায়ী গোপালগঞ্জ জেলার মোট জনসংখ্যা ১২ লাখ ৯৫ হাজার ০৫ জন। এরমধ্যে মহিলা ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৩৬ জন। আর পুরুষ ৬ লাখ ৩৪ হাজার ১৬৯ জন। এরমধ্যে মোট প্রবীণের সংখ্যা ৮৭ হাজার ৭৬৫ জন। জেলার মোট জনসংখ্যার ৬.৭৭ % মানুষ ৬৫ বয়সোধ্ব প্রবীণ বলেও আলোচনা সভায় জানানো হয়।
এছাড়া আশ্রয় ও স্বজনহীন প্রবীণদের জন্য গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় ২৫ থেকে ৩০ শয্যা বিশিষ্ট শান্তি নিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। জনবল নিয়োগ হলেই এটি চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

গোপালগঞ্জ প্রবীণ হিতৈষী সংষের সভাপতি মোঃ এমদাদুল হক বলেন, প্রবীণদের জন্য বয়স্কভাতার ব্যবস্থা করায় প্রবীণরা উপকৃত হচ্ছেন। এ টাকা দিয়ে তারা ছোটখাট প্রয়োজন মেটাতে পারছেন। এতে প্রবীণদের মধ্যে এক ধরণের শক্তি ও সাহস সঞ্চারিত হয়েছে বলে আমি মনে করি।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ হারুন অর রশীদ বলেন, প্রবীণরা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ সহ বার্ধক্য জনিত রোগে আক্রান্ত হন। তাই নিয়মিত তাদের শরীরিক পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। এসব কথা চিন্তা করে আমার স্বাস্থ্যবিভাগ ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলার সব প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্যকার্ড প্রদানের উদ্যোগ নিচ্ছি। এ স্বাস্থ্যকার্ড দিয়ে তারা সহজে কম খরচে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহন করতে পারবেন। ভাতার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা পেলে প্রবীণরা আরো ভাল থাকবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

(টিবি/এসপি/অক্টোবর ০১, ২০২৪)