‘ট্রাইব্যুনালে কোনো প্রতিহিংসা নয়, সুবিচার চাই’
স্টাফ রিপোর্টার : আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩- সংশোধনের জন্য আটটি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩’ সংশোধন বিষয়ক একটি মতবিনিময় সভায় এ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আদালত পুনর্গঠন করা। এখানে এখন কোনো বিচারক নেই। এটা এখন আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য। আইনগত সংস্কারের আলোচনা এখানে থেমে থাকবে না। যারা এক্সপার্ট আছেন সবার কাছে পাঠাবো। সবার মতামত নেবো।
তিনি বলেন, আমরা প্রথম দিন থেকে বলছি আমরা এখানে কোনো প্রতিশোধ চাওয়া, কোনো প্রতিহিংসা না, আমরা সুবিচার চাই। আপনারা নিজের চোখে দেখেছেন কী ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমরা বিশ্বাস করতে পারতাম না যে, একটা দেশের বৃদ্ধ প্রজন্ম একটা তরুণ প্রজন্মকে উন্মত্তভাবে খুনের নেশায়....আমাদের চোখের সামনে সব দেখেছি। যত বেদনা ক্ষোভ বুকের ভেতর থাক, আমরা এ চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন আছি যে, আমাদের এ বিচারটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
উপদেষ্টা বলেন, অতীতে বিচারাঙ্গণে কী রকম অবিচার হয়েছে আমরা সব কিছু জানি। এ জন্য সচেতন আছি। এটার পরিপূর্ণতা বিচারকাজে দেখবেন। আগের যে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল আছে সেটার থেকে অবশ্যই অনেকগুণ নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য বিচার হবে।
সবার কাছে পরামর্শ চেয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা কোনো অন্যায় করবো না। সারাক্ষণ আপনাদের ওয়াচডগে (পর্যবেক্ষণ) থাকবো।
সভায় ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩’ সময়োপযোগী করার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনী উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনীতে ৪এ, ১৩এ ও ২০এ নামে তিনটি নতুন ধারা এবং ৩(৩) ও ১২(২) নামে দুটি নতুন উপধারা যুক্ত করা হয়। এছাড়া ধারা ৩(২)(এ), ৪(২) ও ১৯ ধারায় সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত সংশোধনী নিয়ে শিক্ষক-আইনজীবী-সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও তরুণ সমাজের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
আলোচনায় অংশ নেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ, শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম রব্বানী, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব (চলতি দায়িত্ব) ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ ইকতেদার আহমেদ, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্মসচিব (মতামত) এস এম সাইফুল ইসলাম, যুগ্মসচিব (বাজেট ও উন্নয়ন) রুহুল আমীন, অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও অধ্যাপক নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বেগম আসমা সিদ্দীকা, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।
(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪)