তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যায় শেখ ফজলুল করিম সেলিম সহ ১৬১৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

শওকত আলী দিদারের স্ত্রী রাবেয়া রহমান বাদী হয়ে ঘটনার ৪ দিন পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

এ মামলায় কেন্দ্র্রীয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম, যুবমহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভানেত্রী নাজমা আক্তার, তার ভাই কাবুল খলিফা, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মৃনাল কান্তি রায় চৌধূরী, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লেঃ কর্ণেল (অবঃ) মুহাম্মদ ফারুক খানের মেয়ে কানতারা খালেদা খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম সিকদার, সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান টুটুল, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সিদ্দিক সিকদার, গোপালগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম কবির, সাধারণ সম্পাদক আলীমুজ্জামান বিটু সহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের ১১৮ জন আওয়ামী লীগ নেতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া ১ হাজার ৫ শ’ জনকে এ হত্যা মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলার বরাত দিয়ে বাদী রাবেয়া রহামন জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস,এম জিলানী গাড়ি বহর নিয়ে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছিলেন। গাড়ি বহরে তার স্বামী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক ও বাংলাদেশ ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের ১ম শ্রেণির আম্পায়ার শওকত আলী দিদার ছিলেন। তাদের গাড়ি বহর বিকাল ৪ টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চরাপাথালিয়া দোলা পেট্রোল পাম্পের সামনে পৌঁছালে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠি সোটা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সর্জিত হয়ে গাড়ি বহরে হামলা চালায়। এসময় আতংকিত হয়ে সবাই দিকবিদিক ছোটা-ছুটি করে। তার স্বামীকে আসামিরা গাড়ি থেকে নামিয়ে লাঠি-সোটা দিয়ে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। মরদেহ রাস্তার পাশের ঢালে ফেলে রেখে যায়। রাত ৮ টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়না তদন্ত শেষে ১৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ তাদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। দাফন শেষ করতে সময় লেগেছে। তাই মামলা দায়ের করতে বিলম্ব হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান মামলা রেকর্ড হয়েছে জানিয়ে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১২ জনকে আটক করেছি। তাদের ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এজাহারে আটক কারো নাম থাকলে তাকে এই মামলার আসামি হিসাবে সোন এ্যারেস্ট দেখানো হবে। এছাড়া আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪)