তুষার বাবু, নেত্রকোণা : দেশের বাজারগুলো সয়লাব হয়ে আছে অবৈধ আর ভেজাল পণ্যে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ নারীদের নিত্য ব্যাবহার্য প্রসাধণীগুলোর উপর। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিএসটিআইয়ের মান ও পরীক্ষা ছাড়াই অবাধে সেসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে ঢাকা সহ সারাদেশের জেলা শহরগুলোতে।

আজ মঙ্গলবার নেত্রকোণা জেলা সদরের অন্যতম প্রধাণ ব্যাস্ত অঞ্চল বড়বাজার এলাকায় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের একটি অভিযানে অংশগ্রহণ করে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

অভিযানের শুরুতেই শহরের বড়বাজার এলাকার কসমেটিক্সের দোকানগুলোতে তারা অবৈধ, অতিরিক্ত দামের বা অনুমোদনবিহীন বিদেশী পণ্যের তালাশ শুরু করে। প্রথমে একটি দোকানে অভিযানে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের তল্লাশিতে অনুমোদনবিহীন পণ্য পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দোকানীকে জরিমানা করে অপর একটি দোকানে প্রবেশের পর পরই বাজারের দোকানী ও ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয়কসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজিত কথাবার্তা শুরু হয়ে যায়। ঘটনার প্রেক্ষিতে বড়বাজার এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে খবর দেয়া হয়। পরবর্তীতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল এসে সমন্বয়কসহ ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও বাজার কমিটির লোকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।

সমন্বয়কদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র প্রিতম সোহাগ জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সময়ে এসেও বাজারে জিনিসপত্রের দাম স্বৈরাচার সরকারের সময়ের দামেই রয়ে গেছে বা ক্ষেত্রবিশেষে বেড়ে গেছে বলে নেত্রকোণার ছাত্র সমাজ বাজার মনিটরিংয়ের প্রয়োজন বলে মনে করে।

এছাড়াও বাজারে ভ্যাট-ট্যাক্স ও আমদানীকারক বিহীন অবৈধ পণ্যের তথ্যের ভিত্তিতে তারা এই বাজার মনিটরিংয়ের কার্যক্রম করে। তিনি অভিযোগ করেন, মনিটরিংয়ের এক পর্যায়ে বহিরাগত একটি বড় সিন্ডিকেট তিনি ও কিছু নারী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, অভিযানে তারা একটি দোকানে বিএসটিআই কর্তৃক ঘোষিত অবৈধ ও আমদানিকারকের স্টিকারবিহীন দ্রব্য পায়। তাদের তাৎক্ষণিক জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের পণ্য তারা বিক্রয় করবেন না বলে জানায়। পরবর্তীতে আরো একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে সেখানেও একইরকম অনুমোদনহীন কসমেটিক্স পণ্য পাওয়া যায়।

অভিযানে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের অভিযানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তিনি সরাসরি কোন আক্রমণ বা হাতাহাতির অভিযোগ করেননি।

এ বিষয়ে কসমেটিক্স ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেন্টু দাস জানান, অবৈধ বা অনুমোদনবিহীন পণ্য বিক্রয়ের প্রমাণ পেলে ব্যাবসায়ী সমিতি সেই দোকানীর পক্ষে কোন অবস্থান নেবেনা।

তবে উপস্থিত দোকানীদের অনেকেই অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই ব্যাবসায়ীদের সাথে উত্তেজিত আচরণ করে আসছিলো বলেই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

অপর এক দোকানী জানান, ব্যবসার স্বার্থে গ্রাহকের চাহিদা মতো তাদের পণ্য বিক্রি করতে হয়। তবে তাদের কাছে সেই পণ্যের ক্রয়ের রিসিট থাকে।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪)