এলাকাবাসির ক্ষোভ ও হতাশা
নবীনগরে সুশান্ত হত্যার এক মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ
বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের নাসিরাবাদ গ্রামের সুশান্ত সরকার (৩০) হত্যার একমাস পরও কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় স্থানীয় জনমনে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে সুশান্ত হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে গ্রামবাসির উদ্যোগে এলাকায় বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শেষে মানববন্ধন করে খুনীদের ফাঁসি দাবী করা হয়। কিন্তু পুলিশ গত একমাসেও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
স্থানীয় শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক এরকম নৃশংস হত্যাকান্ডের পর গত একমাসেও হত্যাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, 'এই হত্যা মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। যাদের সকলেই স্থানীয় বাসিন্দা ও সুপরিচিত। এরপরও কেন পুলিশ একমাসে একজনকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি, সেটি আমরা কোনভাবেই বুঝতে পারছিনা। আমরা তাই দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দেখতে চাই।'
এলাকাবাসি জানান, গত ১৮ আগস্ট সুশান্তকে হত্যা করা হয়। পরদিন ১৯ আগস্ট নিহতের মা রূপালী সরকার স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতা ও এক সাংবাদিকসহ মোট ৬ জনকে আসামি করে নবীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করেন। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয় গ্রামের বাসিন্দা আশিক মিয়াকে। অপর পাঁচজন হলেন আশিকের বড় ভাই স্থানীয় সাংবাদিক সেলিম রেজা (দৈনিক জনতা), আওয়ামীলীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা শাহজাহান সিরাজ, তার ভাই জাকির হোসেন এবং শাহজাহান সিরাজের দুই ছেলে তুহিন মিয়া ও তুষার মিয়া।
তবে হত্যাকান্ডের পর থেকে সকল আসামি পলাতক রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
এ বিষয়ে নবীনগর থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির আজ দুপুরে বলেন, 'আমি নবীনগর থানায় মাত্র দু'দিন হল যোগ দিয়েছি। খুনের ঘটনাটি সম্পর্কে আমি তাই অবগত নই। তবে আজই (মঙ্গলবার) হত্যা মামলার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’
মামলার বাদী নিহতের মা রূপালী সরকার জানান, ১ নম্বর আসামি এলাকার বখাটে আশিক মিয়া (২৮) গত আগস্ট মাসের ১৮ তারিখ রাত আনুমানিক সাড়ে এগারটার দিকে আমার ছেলে সুশান্তকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরদিন সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে গ্রামের পাশে থাকা মেঘনা নদীর পাড়ে সুশান্তের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়।
রূপালী সরকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও জানান, 'আমার ছেলে সুশান্ত একটি পুরনো মটর সাইকেল আশিকের কাছে বিক্রী করেছিলো। কিন্তু আশিক সেই টাকা পরিশোধ না করায়, এ নিয়ে সম্প্রতি আশিকের সাথে সুশান্তের একাধিকবার ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে আশিক তার দলবল নিয়ে এসে সুশান্তকে ওইরাতে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে খুন করে।’
এদিকে এলাকাবাসি জানান, নাসিরাবাদ গ্রামের নিতাই সরকারের ছেলে নিহত সুশান্ত সরকারের ২ মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
দরিদ্র পরিবারের সন্তান সুশান্ত হত্যার পর ওই শিশু পুত্রটির ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেন শ্যামগ্রামের যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক।
(জিডি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪)