নড়াইলে বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত
রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ‘বিশ্বের স্রষ্টা’ হিসেবে পূজিত দেবতা শ্রী শ্রী বিশ্বকর্মার পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্বকর্মা পূজা বা বিশ্বকর্মা জয়ন্তী হচ্ছে একটি হিন্দুধর্মীয় উৎসব। হিন্দু স্থাপত্য দেবতা বিশ্বকর্মার সন্তুষ্টি লাভের আশায় এই পূজা করা হয়। তিনি স্বয়ম্ভু এবং বিশ্বের স্রষ্টা হিসাবে পূজিত হন।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী শ্রী শ্রী বিশ্বকর্মা দেবতার পূজা পালিত হয়েছে।
বিশ্বকর্মা দেবতা কৃষ্ণের রাজধানী দ্বারকা শহরটি নির্মাণ করেছিলেন। এছাড়াও তিনি রামায়ণে বর্ণিত লঙ্কা নগরী, পাণ্ডবদের মায়া সভা, রামায়ণে উল্লেখিত ব্রহ্মার পুষ্পক রথ, দেবতাদের বিভিন্ন গমনাগমনের জন্য বিভিন্ন বাহন, দেবপুরী এবং বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিব এর ত্রিশূল, কুবের এর অস্ত্র, ইন্দ্রের বজ্র, কার্তিকের শক্তি সহ দেবতাদের জন্য বহু কল্পিত অস্ত্রের স্রষ্টা।
বিশ্বকর্মার ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, তিনি এই বিশ্বের সব কর্মের সম্পাদক। তিনি সব ধরনের শিল্পের প্রকাশক। শিল্পবিদ্যায় বিশ্বকর্মার রয়েছে একচ্ছত্র অধিকার। তিনি নিজেই চতুঃষষ্টিকলা, স্থাপত্যবেদ এবং উপবেদ এর প্রকাশক।
পূরাণে উল্লেখ আছে, পুরীর বিখ্যাত জগন্নাথমূর্তিও তিনিই নির্মাণ করেন। এজন্য তাকে স্বর্গীয় সূত্রধরও বলা হয়।
ভাদ্র মাসের শেষ দিনে বিশ্বকর্মার পূজা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য দেব-দেবীর মতোই মূর্তি গড়ে অথবা ঘটে-পটে বিশ্বকর্মার পূজা করা হয়। সূতার-মিস্ত্রিদের মধ্যে এ পূজার প্রচলন সর্বাধিক।
তবে বাংলাদেশে স্বর্ণকার, কর্মকার, নরসুন্দর এবং দারুশিল্প, স্থাপত্যশিল্প, মৃৎশিল্প প্রভৃতি শিল্পকর্মে নিযুক্ত ব্যক্তিগণও নিজ নিজ কর্মে দক্ষতা অর্জনের জন্য বিশ্বকর্মার পূজা করে থাকেন। কোথাও কোথাও পূজার পরে ঘুড়ি ওড়ানো উৎসব পালিত হয়।
দেশের অন্যান্য স্থানের মত নড়াইল জেলার স্বর্ণকার, কর্মকার, নরসুন্দরসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শ্রী শ্রী বিশ্বকর্মা পূজা পালন করেছেন। এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা স্ব স্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানাসহ অন্যান্য শিল্প সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানে শ্রী শ্রী বিশ্বকর্মা দেবতার পূজা উদযাপিত হয়েছে। পূজা শেষে ভক্তবৃন্দের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
(আরএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪)