মোহনীয় সুরের আবেগীয় জাতীয় সঙ্গীত প্রসঙ্গে দু'টি কথা
আবীর আহাদ
বিশ্বকবি বরীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি" আমাদের মহান জাতীয় সঙ্গীত। আবহমান বাংলা ও বাঙালির প্রকৃতি ও সৌন্দর্যজাত মোহনীয় সুরের মুর্ছনায় উদ্বেলিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত প্রান্তরে এ সঙ্গীত আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী জনগণকে দেলের স্বাধীনতা অর্জনে অমূল্য জীবনকে উৎসর্গ করার মে প্রেরণা যুগিয়েছিলো, তারই পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়র পর রচিত জাতীয় সংবিধানে সেটাকে যথাযথ ঠাঁই দেয়া হয়েছে।
স্বাধীন বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রীয় রাজনৈতিক পটপরিপর্তনের পরে, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধমহল ও তাদের ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারণায় উন্মাদ হয়ে মুক্তিযুদ্ধ না-দেখা প্রজন্মের একটা অংশ জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তনের যে দাবি জানায়, তার মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা ও অস্বীকার করা হয়। এতে করে দেশের স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণ, বিশেষ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মনে গভীর কষ্টের উদ্রেক ঘটে। ফলে তাঁদের প্রাণে আঘাত দিয়ে চিরমোহনীয় জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে নেতিবাচক অপপ্রচার ও তা পরিবর্তন করা হলে দেশে যে তাণ্ডব শুরু হবে, যার পরিণতিতে দেশের মধ্যে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে হয়।
একজন মুক্তিযেদ্ধা হিসেবে আমি তাই সরকার ও সংশ্লিষ্টমহলকে জাতির অন্তরে গেঁথে-যাওয়া অমর সঙ্গীত "আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি" নিয়ে কোনোপ্রকার ভিন্ন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
লেখক : মুক্তিযোদ্ধা, লেখক ও গবেষক।