ধামরাইয়ে বুচাই চাঁন পাগলার মাজার গুড়িয়ে দিল মুসল্লিরা
দীপক চন্দ্র পাল, ধামরাই : মাইকিং করে লোক জড়ো করার পর ঢাকার ধামরাইয়ে প্রকাশ্যে গুড়িয়ে দেওয়া হলো বুচাই চাঁন পাগলার মাজার। গতকাল বুধবার দুপুরে ধামরাইয়ের সানোড়া ইউনিয়নের বাটুলিয়ায় অবস্থিত মাজারটি ভাঙতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সহস্রাধিক মুসল্লি অংশ নেন।হামলাকারীরা ভেকু দিয়ে মাজারসহ সেখানকার স্থাপনাগুলো গুড়িয়ে দেওয়ার পর তারা সেখানে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পরে খবর পেয়ে বিকেলে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা, ধামরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রশান্ত বৈদ্য, ধামরাই থানার ওসি (তদন্ত) মোমেনুল হক ঘটনাস্থলে গেলে মুলল্লিরা চলে যায়।
স্থানীয়রা জানান, ধামরাইয়ের বাটুলিয়া এলাকার বুচাই চান পাগল লেংটা পাগল হিসেবে এলাকায় পরিচিত। ২০০০ সালে মৃত্যুর পর তাকে ঢাকা-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ধামরাইয়ের বাটুলিয়া কবরস্থানে দাফন করা হয়। এরপরই বাটুলিয়া এলাকার কিছু লোকজন তার কবরটি বাধাই করে মাজার হিসেবে গড়ে তুলেন।
এরপর থেকে প্রতি বছর সেখানে এক মাস ব্যাপী মেলা ও ওরশ পালন করেন ভক্তরা। মেলা ও ওরশে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতি বছর লাখো মানুষের ঢল নামে এবং গরু, ছাগল, হান-মুরগি, স্বর্ণাংলকার, নগদ টাকাসহ বিভিন্ন জিনিস মাজারে মানত করে আসছিল ভক্তরা ও দিয়েছে।
মুসল্লিরা জানান, মাজারে মাদক সেবনসহ নানা আসাজিক কার্যকলাপ চলে আসছিল। সিজদা করা শিরিক। তাই দীর্ঘদিন ধরেই মাজারটি বন্ধ করার জন্য মুসল্লিরা মুখিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তনের পরই গতকাল বুধবার সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ধামরাইয়ের বিভিন্ন গ্রামের মুসল্লিা বুচাই চান পাগলার মাজার ভাঙ্গতে সেখানে জড়ো হয়। এরপর দুপুরের দিকে প্রথমে ভেকু মেশিন দিয়ে মাজারের মুল ভবন ভাঙ্গা হয়। এরপর গান বাজনার জন্য নির্মিত কয়েকটি টিনের ঘরও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বুচাই চান পাগলার মাজারের ওরশ ও মেলা কমিটির সভাপতি সালেহ ইসলাম বিপ্লব জানান, অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন ধামরাইয়ের প্রখ্যাত বুচাই চাঁন পাগলা। তিনি ২৪ বছর আগে মারা গেছেন। আর ৩৭ বছর ধরে তার বার্ষিক ওরশ ও মাসব্যাপী মেলায় প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো ভক্তের আগমন ঘটে। গতকাল বুধবার কি কারণে মাজারটি ভেঙ্গে দিলো তা বুঝতে পারছি না। আমি এলাকায় নেই। তবে আমি শুনেছি বিকেলে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা সেখানে যাওয়ার পর ভাঙচুরকারীরা চলে গেছে। তিনি বর্তমানে মাজার কমিটির দায়িত্বে নাই বলেও জানান।
ধামরাই থানার ওসি (তদন্ত) মোমেনুল হক বলেন, খবর পেয়ে আমি এসিল্যান্ড মহোদয় ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা মাজার ভাঙ্গতে নিষেধ করার পর মুসল্লিরা চলে যায়। তবে এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেন।
(ডিসিপি/এসপি/সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪)