রূপক মুখার্জি, নড়াইল : নড়াইলের লোহাগড়ায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের হামলায় আপন দুই ভাই খুন হয়েছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন আপন আরেক ভাই।

নিহতেরা হলেন- উপজেলার চর মল্লিকপুর গ্রামের মৃত ছামাদ শেখের ছেলে মিরান শেখ (৪২) ও জিয়ারুল শেখ (৩৭)।

গুরুতর আহত আরেক ভাই ইরান শেখ (৩৫)। আহত ইরান শেখকে প্রথমে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফা তাসনিন।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার চর মল্লিকপুর গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।

নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দূর্বৃত্তরা ওই গ্রামের তিনটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (৭সেপ্টেম্বর) রাতে দূর্বৃত্তরা চর মল্লিকপুর গ্রামের সিরাজ শেখের ছেলে লিন্টু শেখের গাছ কেটে দেয়। গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে নিহত পরিবারের সাথে বিবাদ শুরু হয়। এনিয়ে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হলে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে সেনাবাহিনী সদস্য ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ গ্রামের দুপক্ষের মাতুব্বররা উপস্থিত ছিলেন।

মিমাংসা হওয়ার পর আজ বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে আবারও দুই পক্ষের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ বিষয় নিয়ে আজ বিকেলে সকলে বসে মীমাংসা করার কথা বলা হয়। এরপর যার যার মত বাড়িতে চলে যায়।

বাড়িতে যাওয়ার সময় একই গ্রামের কালাম হুজুরের বাড়ির সামনে থেকে প্রতিপক্ষের ৩০/৪০ জনের ওৎ পেতে থাকা একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রসহ তাদের উপর হামলা করে। এ হামলায় আপন দুই ভাই ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। অন্য আরেক ভাইকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। আহত ইরান শেখের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানান তার স্বজনরা।

স্বজনরা আরও জানান, চর মল্লিকপুর গ্রামে দুইটি দল রয়েছে। একপক্ষের নেতৃত্ব দেন ফেরদৌস রহমান এবং অন্যপক্ষের নেতৃত্ব দেন খান মাহমুদ আলম। যারা নিহত হয়েছেন তারা ফেরদৌস রহমানের সমর্থিত লোকজন।

এ বিষয়ে নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার কাজী এহসান কবির সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। অপরাধী যেই হোক তাদের কোন ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোন ধরনের সহিংসতা যেন আর না হয় এ কারণে ওই গ্রামে সেনাবাহিনীসহ পুলিশের একাধিক টিম মোতায়েন রয়েছে।

(আরএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪)