২০১৪ সালে যুবদল নেতাকে হত্যার পর লাশ গুমের চেষ্টা
সাতক্ষীরা জেলা আ. লীগের সাবেক সভাপতি মুজিবুরসহ ৩৮ জনের নামে মামলা
রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুরাতন সাতক্ষীরা ঘোষপাড়ার ও পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবীর হোসেনকে বাড়ি থেকে তুলে এনে শ্যামনগর উপজেলার মালঞ্চ নদীর চরে গুলি করে হত্যার পর পানিতে ফেলে লাশ গুম করার চেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. এবাদুল হক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের চাচা মোঃ মোনায়েম খান বাদি হয়ে তৎকালিন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান, জজ কোর্টের সরকারি কৌশুলী অ্যাড. শম্ভুনাথ সিংহ ছাড়াও ৩৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্হাতনামা ১২ জনের বিরুদ্ধে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে গত মঙ্গলবার এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন-সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম, সহসভাপতি আবু আহম্মেদ, সাবেক পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এসএম শওকত হোসেন, সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, ভোমরা বন্দরের মামা ভাগ্নে ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আজাহারুল ইসলাম, বৈকারী ইউপি’র সাবেক চেয়াম্যান আসাদুজ্জামান অসলে ও পুরাতন সাতক্ষীরার আনোয়ার হোসেন চাঁন্দু।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরা পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পুরাতন সাতক্ষীরা ঘোষপাড়ার আব্দুর রউফ খাঁ’র ছেলে আবীর হোসেন ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সৎ ও নিষ্ঠাবার বিএনপি নেতা হওয়ায় ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ১ থেকে ১০ নং আসামীর হুকুমে বাড়ি থেকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায় আসামীরা। পরে তাকে মালঞ্চ নদীর চরে মাথায় ও বুকে গুলি করে হত্যার পর নদীতে ফেলে দিয়ে লাশ গুম করে ফেলার চেষ্টা করা হয়। ২৫ ফেবুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বুড়িগোয়ালিনি পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক এনামুল হক মালঞ্চ নদীর চরে একটি লাশ পড়ে আছে মর্মে জানতে পারেন। লাশ গুম করার জন্য আবির হাসানের লাশ অজ্ঞাত হিসেবে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে রসুলপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। ছবিসহ পত্রিকায় ছাপা হলে স্বজনরা ওই লাশ আবীর হোসেনের বলে চিনতে পারে। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় কারো নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৪ সালের ২৪ আগষ্ট পুলিশ এ মামলায় আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পরবর্তী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আবীর হোসেনের লাশ উত্তোলনের জন্য নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়। পরে রসুলপুর কবরস্থান থেকে নিহত আবীর হাসানের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বাদি ও ভিকটিম বিএনপি করায় ওই সময় কোন সুবিচার পান নাই। এ কারণে পরিস্থিতি অনুকুলে আসার পর মঙ্গলবার এ মামলা দায়ের করা হলো।
(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪)