১১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনী পাকসেনা ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালায়
উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : আড়াইহাজার থানার কামানদি চরে পাকসেনারা ঘাঁটি স্থাপন করে এবং নিকটস্থ গ্রাম থেকে মেয়েদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে অত্যাচার চালায়। এই সংবাদ পেয়ে মুক্তিবাহিনীর ২৯ জনের একটি গেরিলা দল পাকসেনা ঘাঁটি আক্রমণ করে।
৩/৪ ঘন্টা যুদ্ধের পর পাকসেনারা ঘাঁটি ছেড়ে পালিয়ে যায়। এই আক্রমণে ৫ জন পাকসেনা ও ৬ জন রাজাকার নিহত হয়। গেরিলারা ক্যাম্প থেকে মেয়েদের উদ্ধার করে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
কুমিল্লায় মুক্তিবাহিনী লক্ষ্মীপুরস্থ পাকসেনা ঘাঁটির ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ২টি বাঙ্কার ধ্বংস হয় এবং ১১ জন পাকসৈন্য নিহত ও ৭ জন আহত হয়।
২নং সেক্টরে চতুর্থ বেঙ্গলের ‘ডি’ কোম্পানীর দুই প্লাটুন যোদ্ধা বগাবাড়ির কাছে পাকসেনাদের এ্যামবুশ করে। এই সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে পাকসেনারা টিকতে না পেরে পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়। এতে ১৫ জন পাকসেনা নিহত ও ২ জন আহত হয়।
২নং সেক্টরে মুক্তিবাহিনী পরশুরামের কাছে পাকবাহিনীর ঘাঁটির ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে ৭ জন পাকসেনা নিহত ও ১৫ জন আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
মুক্তিবাহিনী আখাউড়ার কাছে পাকসেনা বোঝাই একটি ট্রেনকে এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে ট্রেনের আরোহী পাক সামরিক অফিসার, ইঞ্জিন ড্রাইভার ও বহু সংখ্যক রাজাকার নিহত হয়।
ঢাকার একজন সামরিক মুখপাত্র স্বীকার করেন মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা এখন পথে পথে মাইন পুঁতে রাখছে। রাজাকার ও অন্যান্য আধা-সামরিক বাহিনীর ওপর চোরাগোপ্তা আক্রমণ চালাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম রজার্স পাকিস্তানে উন্নয়ন সাহায্য অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা অনুমোদনের জন্য মার্কিন কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তান সরকারের প্রতি এমন পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহবান জানিয়েছি যাতে শরণার্থীরা স্বদেশে ফিরে আসতে পারেন এবং কার্যকরভাবে সার্বিক কর্মসূচী শুরু করা যেতে পারে।
বাংলার বাণী পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয় : সাতারার উত্তরে মুক্তিযোদ্ধাদের পুঁেত রাখা মাইন বিস্ফোরণে হানাদার সেনাদের একটি জীপ চ’র্ণবিচ’র্ণ হয়ে যায় এবং জীপের ৪ জন আরোহী শত্রুসেনা নিহত হয়।
তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪)