শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ, সোনারগাঁ : নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বৈদ্দ্যেরবাজার ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ "বৈদ্দ্যেরবাজার এন এ এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.কামাল হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

আজ সোমবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গন থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের সাথে অভিভাবক ও বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি উপজেলা চত্ত্বরে এসে মানববন্ধন করে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমানের কাছে ১৩ দফা দাবী উপস্থাপন করে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবীতে স্বারক লিপি প্রদান করেন৷ এসময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরেন।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কার করা না হলে তারা ক্লাসে ফিরে যাবে না। তাদের এ দাবির সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে অভিভাবকরাও,তারা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাবেন না বলে জানান।

প্রধান শিক্ষককে বহিষ্কার করা না হলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন হুমকির মধ্যে পড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। তারা বলেন- ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষকের লোকজন শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিচ্ছে।

বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি এতো বছর অনেক দূর্নীতি ও অনিয়মে লিপ্ত ছিলেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে তার আচরণ ছিলো অশালীন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকায় বিদ্যালয়ের সকল কর্মকাণ্ড চলতো তার স্বেচ্ছাচারীতায়। কিছু বললেই তিনি শিক্ষার্থীদের মানষিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতো।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আজিজ হোসেনসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বিগত সময়ে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টিকে দূর্নীতির আখড়া তৈরি করে ফেলেছেন। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকরাও কোনো কথা বলতে পারেনি। এ শিক্ষার্থী আরও অভিযোগ করেন, করোনা কালীন সময়ে শিক্ষকদের থেকে জোড়পূর্বক সাক্ষর নিয়ে সাত মাসের বেতন আত্মসাৎ করেছেন এ প্রধান শিক্ষক। প্রতি মাসে পরীক্ষার অজুহাত দেখিয়ে ২'শ থেকে ৬'শ টাকা অতিরিক্ত ফি নেন বলেও অভিযোগ করেন। প্রধান শিক্ষকের সেচ্ছাচারিতার কারনে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের শিক্ষকরা ক্লাস নিতে পারছেন না। তিনি যখন যাকে খুশি তাকে ক্লাসে পাঠিয়ে দেন। কম্পিউটার ল্যাব থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘ ৮ মাস যাবত তাদের কোনো ক্লাস হয়নি বলেও জানায়। এসময় মানববন্ধনে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের পদত্যাগের দাবীও জানান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা রহমান বরাবর প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের কপি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হলে তিনি জানান, আজ এ উপজেলায় তার প্রথম অফিস। বিস্তারিত জেনে তদন্ত সাপেক্ষে কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে অপসারণ করা হবে। সেই সাথে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেন তিনি।

(এসবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪)