একে আজাদ, রাজবাড়ী : পার্সিমন চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রাজবাড়ী জেলা শহরের অংকুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক নাজমুল আলম চৌধুরী। পাঁচ বছর টানা পরিচর্যা করে সুফল পেয়েছেন তিনি। তাঁর রোপণ করা ছয়টি পার্সিমন গাছের মধ্যে গেল বছর মাত্র চারটি ফল টিকলেও এবার ধরেছে শতাধিক ফল। যে ফলগুলো এরই মধ্যে পাকতে শুরু করেছে।

শিক্ষক নাজমুল আলম চৌধুরীর বাড়ি রাজবাড়ী জেলা শহরের ২ নম্বর বেড়াডাঙ্গা এলাকায়। শৌখিন এই শিক্ষক তাঁর বাসার ছাদেও রোপণ করেছেন শত প্রজাতির গাছ। বাড়ির সামনের ফাঁকা জমিতে রোপণ করেছেন পার্সিমনসহ অন্যান্য গাছ। গাছগুলো দেখতে অনেক সময় বিভিন্ন স্থান থেকে লোকেরা আসে।

পার্সিমন ফল দেখতে আসা সহকারী শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন ও রাইসুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রথম পার্সিমন ফল দেখলাম এবং ফল খেয়ে অসাধারণ স্বাদ লেগেছে। এই গাছ পুরো রাজবাড়ী জেলার প্রতিটি বাড়িতে থাকা দরকার। সবাই তাহলে এই ফল খেতে পারবে।’

গৃহবধূ পলি চৌধুরী বলেন, ‘পার্সিমন ফল দেখতে অনেকটাই টমেটোর মতো।তবে ফলের ভেতরটা অন্য রকম। খেতে অসাধারণ স্বাদ।’

শিক্ষক নাজমুল আলম চৌধুরী জানান, বিদেশি গাছ সংগ্রহের প্রতি তাঁর অধিক আগ্রহ রয়েছে। যার অংশ হিসেবে চার বছর আগে তিনি পার্সিমন গাছের চারা সংগ্রহ করেন। অবশেষে তিনি সফল হয়েছেন এবং পার্সিমন উৎপাদন করতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে পার্সিমন গাছের চারা চার হাজার টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ এই চারার এত মূল্য হওয়ার কোনো কারণ নেই। স্বল্প দামেই এই চারা বিক্রি করা সম্ভব।’ জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন। সেখানে জাপানে এই ফলের ডাক নাম ‘কাকি’। উৎপাদনের দিক থেকে এ ফল বিশ্বে সবচেয়ে বেশি হয় চীনে। তারপরের স্থান দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের।

রাজবাড়ী সরকারি হর্টিকালচারের সহকারী উদ্যানতত্ত্ববিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক নাজমুল আলম চৌধুরীকে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করেছি। পরামর্শ দিয়েছি। রাজবাড়ী জেলায় দ্বিতীয়বারের মতো পার্সিমন উৎপাদন হলো। চেষ্টা করছি, এই ফলের চারা জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে।’

তিনি জানান, পার্সিমন ১.৫ সেমি হতে ৯ সেমি (০.৫ থেকে ১৫ ইঞ্চি) বৃত্তাকার আকৃতির হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে প্রায় ৭৫০ জাতির পার্সিমন উৎপাদিত হয়। বেশির ভাগ পার্সিমনই বীজশূন্য। এই ফল আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধসহ বহু রোগ নিরাময়ে সহায়তা করে।

(একে/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪)