ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : পেশায় সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে নির্যাতন,বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ, হামলা-মামলা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনই যেন তার কাজ। তার হাত থেকে রেহায় পাননি তার মা, বোন ও বোনজামাই। মেয়ের এমন অত্যাচারে ইতোপূর্বে মা সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন। প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে, তবে সাধারন ডায়েরি থানা কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেননি। সাধারণ ডায়েরীও করেছেন থানায়। তবুও মেলেনি প্রতিকার। এই শিক্ষা কর্মকর্তার নাম ফেরদৌস আরা। বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ফাজিলপুরে। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন শৈলকুপায়। তবে একই পদে সদ্য যোগদান করেছেন খুলনা সদরে।

সূত্রে জানা যায়,ফেরদৌস আরার বাবা মৃত আবু বকর সিদ্দিকীর রেখে যাওয়া সম্পদ পরিবারের সবার নামে থাকলেও সেই সম্পদ একা ভোগ করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি।

পিতার রেখে যাওয়া জমিতে বাড়ি নির্মাণ করে তা ভাড়া দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই সংসার চালান মা আঞ্জুমান আরা খানম। তবে সেই বাড়ি নিজের দখলে নিতে ফেরদৌস আরা ও তার স্বামী এসে ঘরের ভাড়াটিয়াদের বের করে তালা লাগিয়ে দেয়। এছাড়াও বসতবাড়ি তার নামে লিখে দিতে অত্যাচার-নির্যাতন করে। এমনকি আদালতে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলাও দায়ের করে। তবে অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় শৈলকুপা মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ছোটবোন জাফরিন আরা ও তার স্বামী শৈলকুপা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আফরোজ আল মামুনের নামে ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর তারিখে পৌর মেয়র বরাবর লিখিত অভিযোগ, একই বছরের ১৬ নভেম্বর মিথ্যা ও হয়রানিমূলক জিডি, ২২ তারিখে দেওয়ানী মামলা, ২০২৪ সালের ২৯ এপ্রিল ১০৭/১১৭(৩) ধারায় ফৌজদারী মামলা, চলতি বছরের ১০ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ ও ১০ জুলাই সহকারী পুলিশ সুপার বরাবর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করেন ফেরদৌস আরা।

এদিকে ফেরদৌস আরার দায়ের করা মামলায় আদালত শৈলকুপা থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। মামলার তদন্তে দায়িত্ব পান উপ-পরিদর্শক সাজ্জাদুর রহমান। তবে তিনি ঘটনাস্থলে না গিয়েই ইচ্ছেমতো তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পেশ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও শৈলকুপা থানা পুলিশের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্র বিহীন অনলাইন জিডি জমা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

ভুক্তভোগী শৈলকুপা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আফরোজ আল মামুন ও অভিযুক্তের ছোটবোন জাফরিন আরা বলেন, ‘মায়ের পক্ষ নিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় মিথ্যা মামলা ও অভিযোগ দিয়ে ফেরদৌস আরা আমাদের হয়রানি করছে। আমরা এর সঠিক তদন্ত পূর্বক প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি।’

অভিযুক্ত ফেরদৌস আরা মুঠোফোনে জানান, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

(এসআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪)