তুষার বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ : সেনাবাহিনীর মামলায় গ্রেফতারকৃত এলাহি সিকদার (২৫) নামে এক হাজতির হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ফলসী গ্রামে। বাবার নাম মহি সিকদার।তিনি ফলসী বাজারে মিষ্টির দোকান করতেন। 

আজ রবিবার রাত দেড়টার দিকে গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে ফলসী গ্রামের বাড়ি থেকে এলাহিকে গ্রেফতার করা হয়।

গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার মোঃ আল মামুন ওই হাজতির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই আসামীকে হাসপাতালের ছাড়পত্র সহ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। সে সময়ে তাকে অসুস্থ্ দেখানো হয়। তখন তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে আবার জেলা কারাগারে নিয়ে আসা হয়। গতকাল ৭ সেপ্টেম্বর ফের অসুস্থ হলে তাকে সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে তিনি মারা যান। আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তার মরদেহ স্বজনদের কাছে বুঝে দেওয়া হয়েছে।

আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বিচিত্র কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন, তার মৃত্যুর কারণ পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জানা যাবে।

গোপালগঞ্জ আড়াই শ’ বেড জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, ইলাহি সিকাদারকে ৩ বার হাসপাতালে আনা হয়।এরমধ্যে ১ বার তাকে ভর্তি করা হয়। ২ বার চিকিৎসককে দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গত ১০ আগস্ট বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে ৬টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এতে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। দু’ পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়ে। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জে কর্তব্যরত সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধদের মহাসড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন।

এ সময় সেনাসদস্যদের সথে বিক্ষুব্ধরা তর্ক বিতর্ক করতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা সেনাসদস্যদের ওপর হামলা করেন। এতে সেনাবাহিনীর ৪ কর্মকর্তাসহ ৯ জন আহত হন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর দুটি রাইফেল ও ৬ টি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে দুটি অস্ত্র ও তিনটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।

এ ঘটনায় গত ২১ আগস্ট লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৩ হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে গোপালগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, সেনাবাহিনীর মামলায় এ পর্যন্ত ২১ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

(টিবি/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪)