রিয়াজুল রিয়াজ, ফরিদপুর : ফরিদপুর জেলার সকল নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

আজ রবিবার বেলা ২ টার সময় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সিভিল সার্জন অফিসের পকেট গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে অফিসটির সামনের রাস্তায় অবস্থান করছিলেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজ রবিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ফরিদপুরের বিভিন্ন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হন। তারপর দুপুর ১২ টার দিকে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিসের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। এই সংবাদ দেখা পর্যন্ত তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলছিল। ফরিদপুর জেলার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহে অনিবন্ধিত ভুয়া নার্স নিয়ে নার্সিং সেবা দেওয়ার নামে প্রতারণা ও স্বাস্থ্য সেবায় সকল প্রকার দুর্নীতি বন্ধের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

ফরিদপুর জেলার নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ এাই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।

তারা ফরিদপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন শাহ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা এর কাছে ‌ফরিদপুরের স্বাস্থ্যসেবার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন অনিয়ম এর বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ও প্রতিকার দাবি করেন। তাদের দাবী, ফরিদপুরে বিভিন্ন ক্লিনিকে এবং নার্সিং হোম গুলোতে চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপেশাদার ও ভুয়া নার্স দিয়ে চিকিৎসা করানো হচ্ছে, যে কারণে প্রকৃত দক্ষ নার্সরা সেবা প্রদান করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রোগীদের স্বাস্থ্যসেবাও হুমকির মধ্যে পড়ে ব্যাহত হচ্ছে প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা। এসব প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন অনিয়ম চলার পর অভিযোগ করলে মাঝে মাঝে লোক দেখানো অভিযান চলে, কয়েকদিনের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়, আবারও কেমনে যেন সচল হয়ে যায় সেই প্রতিষ্ঠানগুলো। দুই একদিনের মধ্যে ‌সেই প্রতিষ্ঠানগুলো আবার চালু হয় কেমনে, এমন প্রশ্নও তোলেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, 'আমরা ইতোপূর্বে এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান এর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলেও তিনি আমাদের কথার কর্ণপাত করেননি। এমনকি সিফিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমানের আরেক গুরুপূর্ণ দোসর ও ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিসের দুর্নীতির অন্যতম হোতা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর মো. বজলুর রশিদ খান ওরফে লুইচ্চা বজলু ওসব প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত চাঁদা খেত, যা ফরিদপুরে অপেন সিক্রেট ছিল। স্বাস্থ্যখাতের এমন দূর্নীতি ও লুটপাট চলমান থাকার কারণে এসব জনগুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারকে এতোদিন কোন গুরুত্ব দেননি সিভিল সার্জন। আর তাই আমাদের এই সমস্যাটির স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানেই অবস্থান করবো।’

এরপর শিক্ষার্থীরা তাদের কাঙ্খিত উত্তর না পেয়ে সিভিল সার্জন অফিসের সামনে পকেট গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে সিভিল সার্জন অফিস অবরুদ্ধ করে রাখেন। এরপর অফিসের সামনে রাস্তার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে খন্দকার মইন, আদনান সামি, সোহান ফুয়াদ, নীরা খন্দকার প্রমুখ শিক্ষার্থী। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিস অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলছিল।

(আরআর/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪)