নবী নেওয়াজ, পাবনা : পাবনা সদর থানাধীন বাস টার্মিনাল এলাকায় চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডার মামলার প্রধান আসামি কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী সম্রাটকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

গত ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে পটুয়াখালী জেলার সদর থানাধীন বোতলবুনিয়া গ্রামে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে পাবনা জেলা পুলিশ।

গ্রেফতার সম্রাট শেখ (৪০) জেলার কবিরপুর থানার মৃত মিরাজ শেখের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছে সম্রাট।

এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর সকালে টার্মিনাল এলাকার পৌর মার্কেটের হালিমের হোটেলের গলিতে মিলন হোসেন মধু (৪৫) ও মঞ্জু আলী (৪০) খুন হন। মাদক সেবন এবং ক্রয় সংক্রান্তের পূর্বশত্রুতার জের ধরে খুন হন বলে জানা গেছে।

মধু শহরের শালগাড়িয়া এলাকার মৃত আরমানের ছেলে।মঞ্জু দক্ষিণ রাঘবপুর এলাকার মৃত নুর আলীর ছেলে।

জানা গেছে, আসামি সম্রাট একজন মাদক ব্যবসায়ী। কিছুদিন আগে ভিকটিম মধু এবং মঞ্জু সম্রাটের কাছে মাদক কিনতে গিয়েছিল। কিন্তু আসামি সম্রাট তাদের কাছে মাদক বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানায়। এই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটকাটি এবং মারামারি হয়। ঘটনার দিন সকালে আসামি সম্রাট তার ছেলেকে নিয়ে টার্মিনাল পৌর মার্কেটের হালিমের হোটেলে নাস্তা করতে আসে। এসময় পাশেই আন্তঃজেলা বাস কাউন্টারের কলার এর কাজ করতে থাকা (যাত্রী ডেকে বাসে তোলার কাজ) ভিকটিম মঞ্জু এবং মধু আসামি সম্রাটকে দেখে হালিমের হোটেলের গলিতে এগিয়ে আসে এবং সম্রাটের সাথে কথা কাটাকাটি এবং হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির একপর্যায়ে আসামি সম্রাট উত্তেজিত হয়ে হালিমের হোটেলের পরোটা তৈরির টেবিলে থাকা ময়দার খামির (ডো) কাটার একটা চাকু নিয়ে ভিকটিম মধুর পেটের বাম পাশে আঘাত করে। এই আঘাতের কারণে তাহার ভুরি বের হয়ে যায়। এসময় অপর ভিকটিম মঞ্জু আগাইয়া আসিলে আসামি সম্রাট মঞ্জুর বুকের ডানদিকে ঐ একই চুরি দিয়ে আঘাত করে। দুইজন ভিকটিম গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হয়ে হালিম হোটেলের পাশের খালি জায়গায় গিযে যন্ত্রনায় গড়াগড়ি করতে থাকে। আসামি সম্রাট তখন তার ছেলেকে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে রিক্সায় উঠে চেতনের মোড় দিয়ে লস্করপুর হয়ে বাড়ির দিকে যায়। যাওয়ার সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটি লঙ্করপুর রেল স্টেশন রোডের জনৈক ফারুকের দোকানের নিকট পাকা রাস্তার পাশে ঘাসের মধ্যে ফেলে দিয়ে যায়। অন্য দিকে স্থানীয় লোকজন ভিকটিম মঞ্জু ও মধুকে চিকিৎসার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। আসামি সম্রাট তার স্ত্রীকে ফোন করে ডেকে রাস্তায় এনে ছেলেকে তার কাছে দিয়ে পালিয়ে যায় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি চাকু আলামত হিসেবে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামি সম্রাট এলাকার একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী তার বিরুদ্ধে ৭টি মাদক মামলা রয়েছে। মূলত মাদক ক্রয় বিক্রয়কে কেন্দ্র করে এই ডাবল মার্ডার সংঘঠিত হয়েছে।

(এনএন/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪)