মামলা প্রত্যাহারের পর ফের মামলা, প্রধান আসামি পাপন
সোহেল সাশ্রু, কিশোরগঞ্জ : ভৈরবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুত্বর আহত মামুন মিয়া কিশোরগঞ্জ আদালতে দ্রুত বিচার আইনে ফের মামলা করেছেন। আজ রবিবার বেলা ১২টায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী আপরাধ (দ্রুত বিচার) ট্রাইব্যুনালে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় সাবেক যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতি কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপনকে প্রধান আসামি করে ১১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আহত মামুনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রোববার মামলাটি দায়ের হওয়ার পর আদালত দ্রুত মামলাটি এফআইআরের নির্দেশ দেন।
এর আগে আহত মামুন মিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর দত্তের আদালতে ৫৮ জনের নাম উল্লেখ্য ও ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছিলেন৷ পরে ২৫ আগস্ট একই আদালতে মামলাটি প্রত্যাহার করেন আহত মামুন৷
এ বিষয়ে মামুন বলেন, এর আগে মামলাটিতে আমার এলাকার কিছু নিরীহ ছাত্রকে আসামি করা হয়েছিল। এছাড়াও এই মামলায় নিরঅপরাধ কিছু মানুষকে আসামি করায় আমি মামলাটি প্রত্যাহার করেছি। তবে আজ দ্রুত বিচার আইনে নতুন ভাবে প্রকৃত অপরাধীদের আসামি করে পুনরায় মামলা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে মামলার বাদী মামুন আরো বলেন, ১৯ জুলাই দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক শহীদুল্লাহ কায়সার পাদুকা মার্কেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে আওয়ামী লীগ নেতাদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতারা এক পর্যায়ে আমাদের জগন্নাথপুর এলাকায় ঢুকে যায়। তাদের আমাদের গ্রামবাসীসহ প্রতিহত করতে আমি গেলে আমাকে দা দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাদের আঘাতের ফলে আমার ডান হাতটি কেটে ফেলা হয়েছে। আমি আমার হাত কাটার পর থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছি। বিভিন্ন সংগঠন ও বিএনপির নেতাদের সহযোগিতায় কোন রকম চিকিৎসা করতে পেরেছি। বাকী জীবন কিভাবে কাটাবো আমি এই ভেবে মর্মাহত অবস্থায় রয়েছি। আমি চাই আমাকে যারা আহত করেছে তাদের যেন সাজা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, প্রধান আসামি নাজমুল হাসান পাপন ছাড়াও তার এপিএস আলমগীর, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি সাখাওয়াত উল্লাহ, অহিদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক সেফায়াত উল্লাহ, নির্বাহী সদস্য কবিরুজ্জামান রুমান, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদ সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান মির্জা মো. সোলায়মান, পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভ, সহ-প্রচার সম্পাদক মোশারফ হোসেন মুসা, কোষাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ইকবাল, উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক অলিউল ইসলাম, যুগ্ম-আহবায়ক অরুণ আল আজাদ, ইকবাল হোসেন, আরমান উল্লাহ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আব্দুল হেকিম রায়হান, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন জামাল, পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাধারণ সম্পাদক রাকিব রায়হান, পৌর যুবলীগ সভাপতি ইমরান হোসেন ইমন, সাধারণ সম্পাদক ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আল আমিন সৈকত, সরকারি জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি সাবিহা মাহাবুব প্রভা, উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রিয়াদসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের ১১৭ জনের নাম রয়েছে।
(এসএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৪)