স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর : গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নূর আলম (২২) নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেলহক, সাবেক স্বরাস্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক এমপি সিমিন হোসেন রিমি, মেহের আফরোজ চুমকি, রুমানা আলী টুসি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্ল্যাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান মতিসহ ১৩৯ জনের নামে এবং তাদের সহযোগী আওয়ামী লীগের অজ্ঞাতনামা আরোও ১০০/১৩০ জনকে অজ্ঞাত
আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। মামলার বাদি হয়েছেন নিহত নূর আলমের পিতা মোঃ আমির আলী (৪৪)। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম সদরের মোল্লাপাড়া মধ্য কুমরপুর এলাকায়। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার ১৮নং ওয়ার্ডের তেলিপাড়া এলাকার ডাক্তার
নাহিদের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

বাদি মামলায় উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৬ জনের নির্দেশ অনুযায়ী বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেন, চাপাতি, কোবা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে মারাত্মক দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনী জনতাবদ্ধে গত ২০ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের তেলিপাড়াস্থ হানিমুন রেস্টুরেন্টের সামনে রাস্তায় অবস্থানরত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার উপর হামলা করে। হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরীভাবে কিল ঘুষি মেরে, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাথারী মারপিট করে ছেন ও ধারালো কোপা দা দ্বারা কোপিয়ে খোরশেদ আলম রশিদ (১৯)সহ প্রায় ২৫/৩০ জন আন্দোলনকারীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা ও কাটা রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ আজমত উল্লাহ খান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় অবৈধ অস্ত্রধারী এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিরা ছাত্র জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে
এলোপাথারীভাবে গুলি ছুড়িতে শুরু করে। ঐ সময় তাদের ছোড়া গুলিতে বেলা সোয়া ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নূর আলম (২২) এর ডান চোখের উপর অংশ দিয়ে ভিতরে গুলি ঢকে মাথার পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে নূর আলম নিহত হয়। ঘটনার পর ছেলের মৃত্যুর বিষয়ে শোকাহত হয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কোন আইনী সহায়তা না নিয়ে তাৎক্ষনিক ছেলের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ীতে চলে যান এবং লাশ দাফনের সম্পন্ন করেন। ছেলের মৃত্যুতে পরিবারের লোকজন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ায় এবং বিবাদীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে দেশের বিদ্যমান অরাজকতা পরিস্থিতির কারণে পরিবারের সদস্যদের সাথে আলোচনা এজাহার দিতে বিলম্ব হয়।

(এস/এসপি/আগস্ট ২১, ২০২৪)