রিপন মারমা, রাঙ্গামাটি : রাঙ্গামাটি কাপ্তাইয়ে অবস্থিত  বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইন্সস্টিটিউটের (বিএসপিআই) ৫২ ব্যাচের  এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির সিভিল উড বিভাগের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর এজাবুর আলম এবং ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ আবদুল মতিন হাওলাদার এর  পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে  বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট)  বিকেল হতে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ বুধবার পর্যন্ত  চলমান ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১১ টা) পাওয়া পর্যন্ত ইনস্টিটিউটের শত শত শিক্ষার্থী ক্লাস রুমে ফেলে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভে অংশ নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক এবং অধ্যক্ষ এর ও পদত্যাগ দাবি করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অধ্যক্ষকে তাঁর অফিস হতে বের করে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন হাওলাদার মুঠোফোনে জানান, আজ বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (পিআইডব্লিউ) এ, ওয়াই, এম, জিয়াউদ্দীন আল মামুন সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অভিযুক্ত শিক্ষক এজাবুর আলমকে বিএসপিআই হতে প্রত্যাহার করে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে সংযুক্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ছাত্ররা অভিযুক্ত শিক্ষক এজাবুর আলমসহ আমার পদত্যাগ চেয়েছেন। কিন্তু আমি তো কখনো অন্যায় কাজে ছিলাম না, বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনের বিপক্ষেও ছিলাম না।

অবশেষে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে বিএসপিআই এর অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন হাওলাদার দুপুর ১ টায় অধ্যক্ষ এর পদ হতে পদত্যাগ করেছেন।

সাম্প্রতিক ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট ইনস্টিটিউট এর ৫২ ব্যাচের এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সিভিল উড বিভাগের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর এজাবুর আলমের (৩৫) বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ এর নিকট অভিযোগ দেন। অভিযোগ পাওয়ার পর একই বছরের ৩০ আগস্ট সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় । এ কমিটি ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেন এবং ঐ ছাত্রীর সাথে কথা বলে অভিযুক্তের সত্যতা পান।

পরবর্তীতে যৌন হয়রানি অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক মো.এজাবুরকে একই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর ভোলা পলিটেকনিক্যালে বদলী করা হলেও চলতি বছরের মে মাসে তিনি কাপ্তাই বিএসপিআই এ আবারও যোগদান করেন।

অপরদিকে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট অধ্যক্ষের বরাবর লিখিত অভিযোগে শিক্ষার্থী বলেন,ওই শিক্ষক গত দুই মাস ধরে তার 'এজাবুর আলম’ আইডি থেকে আমার ম্যাসেঞ্জারে নানা রকম প্রলোভন যেমন: আমাকে পরীক্ষায় ভালো নম্বরের ব্যবস্থা করে দিবেন, পরীক্ষায় পাস করিয়ে দিবেন, হোস্টেলে রুমের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলেন। আমাকে প্রতিনিয়ত বিরক্ত এবং ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি তার এই কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হেনস্তা করার জন্য রীতিমত হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

(আরএম/এএস/আগস্ট ২১, ২০২৪)