ফল দোকানি হত্যা
বোন-ছেলে-মেয়েসহ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মামলায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় ফলের দোকানি ফরিদ শেখকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। নিহত যুবক ফরিদ শেখের পিতা সুলতান মিয়ার জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশ পরে দেবেন বলে জানান আদালত।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মো. হাছান মাহমুদ, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন-অর-রশিদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিপ্লব কুমার, সাবেক কমিশনার ডিএমপি হাবিবুর রহমান, জাসদের হাসানুল হক (ইনু), রাশেদ খান মেনন, ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ. আরাফাত, যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসানসহ অজ্ঞাতনামা ২৫০ জন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৪ জুলাই শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলন চলাকালে বিকেল সাড়ে ৩টার সময় ফরিদ শেখ যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজার দক্ষিণ পার্শ্বের রাস্তা দিয়ে, তার ফলের দোকানে যাওয়ার সময় শেখ হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা চালানোর সময় পুলিশের গুলির আঘাতে মারাত্মক জখম হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের লোকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফরিদ শেখকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। গুলি ফরিদ শেখ এর পাকস্থলির ডান পাশে লেগে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুগদা হাসপাতালে ফরিদ শেখ ৬ আগস্ট বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা তার স্বৈরাচারী শাসন কায়েম রাখার জন্য ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের উপর অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় হত্যা, গুম, অপহরণ, বিকলাঙ্গসহ নানান ধরনের অমানবিক অপরাধ সংঘটন করে আসছিলেন। সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার যথাক্রমে পুত্র, কন্যা ও সহোদর বোন। আসামিদের নিজস্ব কোনো পেশা নেই বা কোনো প্রকার ব্যবসায় জড়িত নয়। তাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর পদে বহাল রেখে তার মাধ্যমে বাংলাদেশের টাকা লুট করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পাচার করা এবং উক্ত লুটের টাকা দিয়ে উন্নত জীবনযাপন করা। আসামিদের কুপ্ররোচনায় ও পরামর্শে ১নং আসামি শেখ হাসিনা তার পোষ্য বাহিনী দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে আসছিলেন। আসামিরা অসৎভাবে অর্থ লুট করার জন্য এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভোগ করার জন্য ২০০৯ সাল থেকেই শেখ হাসিনাকে যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য উৎসাহ দিয়ে আসছে। প্রয়োজনে গণহত্যা করার জন্যও শেখ হাসিনাকে তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও বোন শেখ রেহানা টেলিফোন, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে গণহত্যা করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
(ওএস/এসপি/আগস্ট ২০, ২০২৪)