উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : পাকসেনাদের একটি বিরাট দল নদীর পাড় দিয়ে এবং সঙ্গে সৈন্য বোঝায় তিনটি নৌকা শালদা নদী থেকে ব্রাহ্মণপাড়ার দিকে অগ্রসর হয়। পাকসেনাদের এই দলটিকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে নৌকার আরোহী ১৮ জন পাকসেনা নিহত হয়। পাকসোনদের নদীর পাড় দিয়ে আসা দলটির প্রবল চাপে মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে।

মুক্তিবাহিনী সারদা পুলিশ একাডেমীতে অবস্থানরত পাকিস্তানি কোম্পানীর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এই দুঃসাহসিক অভিযানে মুক্তিযোদ্ধা দলের একজন ব্যাতীত সকলেই শহীদ হন।

মুক্তিবাহিনীর সুন্দরবন ক্যাম্পে ক্যাপ্টেন জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের কনফারেন্স ডাকেন। এ কনফারেন্সে বরিশালের চারটি থানা আক্রমণের জন্য পৃথক পৃথক দল গঠন করা হয়। দলগুলো হচ্ছে: ভান্ডারিয়া থানার জন্য সুবেদার আজিজ এবং লতিফের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল; কাউখালী থানার জন্য কমান্ডার হাবিবের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল; রাজাপুর থানার জন্য সুবেদার রুস্তমের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল ও মঠবাড়িয়া থানার জন্য ক্যাপ্টেন জিয়ার নেতৃত্বে ৫০ জনের একটি দল।

কুড়িগ্রামের চিলমারীর পূর্বদিকে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গলের যোদ্ধরা পাকহানাদারদের দু‘টি অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে পাকসেনারা অবস্থান দুটি পরিত্যাগ করে এবং ৪ জন পাকসেনা নিহত হয়।

টাঙ্গাইলে ভাতকুরা ও পয়লার মাঝখানে মুক্তিবাহিনী ও পাকবর্বরদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা বাকু শহীদ হন এবং মুক্তিযোদ্ধারা বিমান বিহার দাস পাকসেনাদের হাতে ধরা পড়েন।

সিলেটে পাকহানাদার বাহিনী ব্যাপক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করে। বানিয়াচঙ্গ থানা সদর থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এক বিশাল দল মাকালকান্দি গ্রামের ওপর হামলা চালিয়ে ৮৭ জন নিরীহ নিরপরাধ লোককে হত্যা করে। গুলিবিদ্ধ করে আরো কয়েকশ’ লোককে। লুন্ঠিত হয় পুরো গ্রাম। পাশের হারুনি গ্রামের ৫ জনকে ও পাকবর্বররা হত্যা করে।

‘খ’ অঞ্চলের সামরিক প্রশাসক লে: জেনারেল টিক্কা খান আওয়ামী লীগের ১৬ জন জাতীয় পরিষদ সদস্যকে ২৩ আগস্টের মধ্যে সামরিক আদালতে হাজির হবার নির্দেশ দেয়। অন্যথায় তাঁদের অনুপস্থিতিতে বিচার করা হবে বলে ঘোষণা করে। এঁরা হচ্ছেন: আনোয়ার হোসেন তালুকদার, মোহাম্মদ বায়তুল্লাহ, খালিদ আলী মিয়া, শাহ মোহাম্মদ জাফরউল্লাহ, এ.এইচ.এম. কামরুজ্জামান, আমিরুল ইসলাম, আজিজুর রহমান আক্কাস, আবু আহমদ আবজালুর রশিদ, কামরুজ্জামান, ইকবাল আনোয়ারুল ইসলাম, সুবোধ কুমার মিত্র, খোন্দকার আব্দুল হাফিজ, সোহরাব হোসেন, এম. রওশন আলী, মোহাম্মদ মহসীন ও শহীদ উদ্দিন।

লাহোরে পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম আজম বলেন, ভারত পাকিস্তানকে দ্বিখন্ডিত করার ব্যাপারে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী (মুক্তিযোদ্ধা) পাঠিয়ে প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছে এবং যুদ্ধের মাধ্যমেই পাকিস্তানকে তার জবাব দিতে হবে।
গোলাম আজম আওয়ামী লীগের ৮৮ জন জাতীয় পরিষদ সদস্যের আসন বহাল থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/আগস্ট ১৭, ২০২৪)