উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : ২নং সেক্টরের পানিয়ারুপ নামক স্থানে মুক্তিবাহিনী হানাদার সেনাদের এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে ১৪ জন পাকসেনা নিহত হয়। এ্যামবুশ শেষে মুক্তিযোদ্ধারা নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।

বগুড়া জেলার সাবগ্রামে গেরিলা বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে পাকবাহিনীর ৫ জন সৈন্য নিহত ও ৬ জন আহত হয়।

পাক হানাদার বাহিনী চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহকুমার শিবগঞ্জ থানায় মুক্তিবাহিনীর কালিবাড়ী অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায়। এই সংঘর্ষে মুক্তিবাহিনীকে প্রচুর ক্ষতি স্বীকার করে কালিবাড়ী অবস্থান ত্যাগ করতে হয়।

পিরোজপুরে মুক্তিবাহিনী কাউখালি থানা আক্রমণ করে। এই অভিযানে মুক্তিযোদ্ধারা কাউখালি থানা ও প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র দখল করে।

রাওয়ালপিন্ডিতে প্রদান সামরিক আইন প্রশাসকের সদও দফতর থেকে ঘোষণা করা হয়: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ও অন্যান্য অভিযোগে বিশেষ সামরিক আদালতে বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার করা হবে। আগামী ১১ আগস্ট বিচার শুরু হবে। বিচারের বিবরণ গোপন রাখা হবে। অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থন ও আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ দেয়া হবে। তবে আইনজীবীকে পাকিস্তানি নাগরিক হতে হবে।

কনভেনশন মুসলিম লীগ সেক্রেটারী জেনারেল মালিক মোহাম্মদ কাসেম তিন মুসলিম লীগকে একত্রীভ’ত করার লক্ষ্যে আলোচনার জন্য ঢাকা আসেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কিং বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার করা হবে বলে প্রথম যে খবর বের হয় সে সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত পাকিস্তান সরকারকে জানিয়ে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, মানবিক কারণে আমাদের উদ্বেগ পাকিস্তান সরকারের কাছে প্রকাশ করেছি। শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এ মুহুর্তে ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্ব পাকিস্তানে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনার ওপর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে বলে আমরা উল্লেখ করেছি।

টাঙ্গাইল জেলা শান্তি কমিটির চেযারম্যান হাকিম হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বিন্দুবাসিনী স্কুল মাঠে একত্র হয়। সভায় জেলা শান্তি কমিটির সেক্রেটারী আবদুল খালেক সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে শত্রুর মোকাবেলা করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ভারতীয় ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়েই পাকিস্তানবিরোধী ধ্বনির উৎপত্তি হয়েছিলো। এই ধ্বনির মাধ্যমেই ভারত এদেশের সরলপ্রাণ জনসাধারণের মধ্যে বিদ্বেষের বীজ বপন করতে চেষ্টা করে। বর্তমানে তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য প্রচারণায় মেতে উঠেছে।

সাপ্তাহিক জয়বাংলা পত্রিকার প্রতিবেদন :
.............সিলেট জেলার উত্তরপূর্ব এলাকায় শাহবাজপুরে মুক্তিবাহিনীর সাফল্যজনক আক্রমণে ৫০ জন পাকসৈন্য খতম হয়েছে। গেরিলা যোদ্ধারা ৪ জন পাকিস্তানি সৈন্যকে জীবন্ত অবস্থায় আটক করতে সক্ষম হয়েছে।

..............যশোরের নাভারন এলাকায় গেরিলা যোদ্ধারা রাজাকারদের ওপর এক অতর্কিত হামলা চালায়। এতে ৯৩ জন শত্রু নিহত ও বহু আহত হয়।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের খবর :
সিলেটের লাতু অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর বীর যোদ্ধাদের সাথে হানাদার পাকিস্তানি সৈন্যদের আট ঘন্টাব্যাপী প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধারা জীবনপণ করে হানাদার শত্রুদের ওপর প্রবল আক্রমণ চালায় এবং ৫৫ জন হানাদারকে খতম করে ও ৬৫ জনকে গুরুতর আহত করে। সংঘর্ষে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন।

রংপুরের চিলমারি থানার ওপর অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়ে গেরিলারা একজন অফিসারসহ ৫ জন পশ্চিম পাকিস্তানি পুলিশকে গুলি করে হত্যা করে।

ঝিকরগাছার পুলিয়ানি গ্রামে হানাদার সৈন্যরা লুটপাট করতে গেলে একজন মুক্তিযোদ্ধা একটি বাগান থেকে গ্রেনেড দিয়ে আক্রমণ চালিয়ে একজন হানাদারকে খতম করে। স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা হালকা মেশিনগান ও রাইফেল দিয়ে অন্য একটি আক্রমণে ৩ জন শত্রু সৈন্যকে হতাহত করে। হানাদার সৈন্যরা এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য উক্ত গ্রামে লুটপাট ও নির্যাতন চালাতে থাকে। গেরিলা যোদ্ধারা পুনরায় আক্রমণ চালিয়ে ২ জনকে খতম ও ২ জনকে আহত করে।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

(ওএস/এএস/আগস্ট ০৯, ২০২৪)