মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির প্রথম দিনে আন্দোলনকারী ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে গোটা শহর।

রবিবার (৪ আগষ্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে শুরু হয় সংঘর্ষের ওই ঘটনা। এতে ইটপাটকেলের আঘাতে অনেকেই আহত হয়েছেন। তবে কতজন আহত হয়েছেন তার সঠিক পরিসংখ্যান না জানা গেলেও ধারণা করা হচ্ছে সাংবাদিক সহ অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বেশ কিছু মোটরসাইকেল। এর মধ্যে দ্বায়িত্ব পালনরত অনেক সাংবাদিকের মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১১ টার দিক আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের একটি অংশ অবস্থান নেন শহরের বেড়িরপাড় এলাকায়। আরেকটি অংশ অবস্থান নেন চৌমুহনা এলাকায়। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন শহরের আদালত সড়কে। এসময় পুরো সড়ক দখলে নেন আন্দোলনকারীরা। সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলে মুর্হুমুহু শ্লোগান। সময় বাড়ার সাথে সাথে সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হতে থাকেন শতশত শিক্ষার্থী সহ হাজারো জনতা। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে চৌমুহনায় অবস্থা নেয়া আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে শুরু হয় প্রথমে সংঘর্ষ। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সড়কের পাশে অবস্থান নিলেও তাদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করতে দেখা যায়। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে পুরো এলাকা রূপ নেয় রণক্ষেত্রে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পথচারী সহ সাধারণ মানুষ। ঘন্টার পর ঘন্টা চলা সংঘর্ষের সময় আন্দোলনকারীরা চৌমুহনা এলাকার পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালান। এর পর ওই এলাকার থেমে থেমে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে। এসময় আন্দোলনকারীদের ধাওয়ায় চৌমুহনা থেকে পিছু হটে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষ চলার মধ্যে বিকাল ৩ টার দিকে সড়ক থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় ছত্রভঙ্গ হয়ে আন্দোলনকারীরা পুরাতন হাসপাতাল সড়ক ও চৌমুহনা পয়েন্ট সহ আশপাশের গলিতে অবস্থান নেন। এর পর থেকে কিছুক্ষণের জন্য কার্যত আন্দোলনকারীদের দখলে চলে যায় পুরো শহর। পিছু হটে কুসুমবাগ এলাকার দিকে চলে যান আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।

(একে/এএস/আগস্ট ০৪, ২০২৪)