বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থানার পুলিশ একটি বসতঘর থেকে বাবা মামা ও দুই শিশু সন্তানহদ সহ একই পরিবারের চারজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে। আজ রবিবার (২৮ জুলাই) সকালে উপজেলা সদরের বিজয় পাড়ার একটি বাড়ি থেকে ওই চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলোর পরিচয় হলো সোহাগ মিয়া (৩৫), তার স্ত্রী জান্নাতুল বেগম (২৪) এবং তাদের দুই কন্যা ফারিয়া (৪) ও ফাহিমা(২)।

ঘটনার খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সোনাহর আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম ও নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ঘটনাস্থথ থেকে ফিরে এসে এডিশনাল এসপি সিরাজুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দুপুর ১২ টার দিকে এ প্রতিবেদককে বলেন,'চারজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ইতিমধ্যে ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।'

পুলিশ ও এলাকাবাসির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নবীনগর বাজারের নিউ মার্কেটের 'রঙমেলা' বস্ত্রালয়ের মালিক সোহাগ মিয়ার মূল বাড়ি উপজেলার বগডহর গ্রামে। তবে তিনি তার পরিবার নিয়ে উপজেলা সদরের বিজয় পাড়ায় বসবাস করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দা উজ্জ্বল ও মনির ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, আজ রবিবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত সোহাগ মিয়ার ঘরের (টিনের ঘর) দরজা বাইরে থেকে বন্ধ দেখতে পেয়ে সোহাগকে ডাকাডাকি করতে থাকেন প্রতিবেশী তার শ্বাশুরী। কিন্তু অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পরও ঘর থেকে কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় হৈচৈ শুনে ঘরের সামনে আশে পাশের লোকজন জড়ো হতে থাকে।

পরে লোকজন ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে ঘরের তীরে গলায় কাপড় পেচানো অবস্থায় আলাদা আলাদা ভাবে সোহাগ, তার স্ত্রী জান্নাতুল ও তাদের দুই শিশু সন্তানের লাশ ফাঁসিতে ঝুলছে।

ঘটনা জানাজানি হলে, সেখানে শোকের ছায়া নেমে আসে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে লাশগুলো উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

এলাকার লোকজন জানান, ঋণগ্রস্থ ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া বেশ কিছুদিন যাবৎ ঋণের চাপে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, পাওনাদারদের টাকার চাপে অতিষ্ঠ হয়ে চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত সোহাগ মিয়া সপরিবারে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে!'

তবে এটি আত্মকত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, পুলিশ সেটিও খবিয়ে দেখছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম জানান,"ঋণের চাপে হতাশাগ্রস্ত হয়ে ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া সপরিবারে আত্মহত্যা করেছে, এমন কথা আমরাও লোকমুখে শুনতেছি। পুলিশ পুরো ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকান্ড, সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই পরিষ্কার হয়ে যাবে। আশা করছি, সহসাই বিস্তারিত আপনাদেরকে (সাংবাদিক) জানাতে পারবো।"

(জিডিএ/এএস/জুলাই ২৮, ২০২৪)