রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরে ছাত্র সমাবেশে মারামারির ঘটনায় চার ছাত্রলীগ নেতা আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে তানজিদ ইসলাম নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে জামালপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশনের মূল প্রবেশ পথের সামনে পৌর ছাত্রলীগ আয়োজিত এক ছাত্রসমাবেশে এ মারামারির ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- পৌর ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আল শাহরিয়ার নিরব, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আহমেদ তিলক, রাফিদুল ইসলাম তানিম ও সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তন্ময়। এদের মধ্যে পৌর ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আল শাহরিয়ার নিরব গুরুতর আহত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ১০টার দিকে রেলওয়ে স্টেশনের মূল প্রবেশপথের সামনে ছাত্রলীগের ছাত্রসমাবেশ করছিলেন নেতাকর্মীরা। হঠাৎ তাদের মধ্যে মারামারি লেগে যায়। এতে নিরব নামে এক ছাত্রলীগ নেতা পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় পুলিশ ছাত্রলীগ নেতা তানজিদকে আটক করেছে।

জামালপুর পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ফাহিম মোস্তাফিজ এলিট জানান, জামালপুর শহরে শান্তি বিরাজের লক্ষ্যে জেলা ছাত্রলীগের তত্ত্বাবধানে ও সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহযোগিতায় সকাল ১১টার দিকে রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় আমরা ছাত্র সমাবেশ করছিলাম। হঠাৎ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগনেতা মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে আমাদের সমাবেশে হামলা চালায়। এসময় তানজিদ ইসলাম ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। পরে আমাদের ছাত্রলীগনেতা নিরবসহ কয়েকজন আহত হয়। এদের মধ্যে নিরবকে গুরুতর আহত অবস্থায় জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমাদের এই প্রোগ্রামটা বানচাল করার জন্যই তারা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীনের কথাও জানান তিনি।

জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাফিউল করিম রাব্বি জানান, সকাল ১১টার দিকে রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে আমাদের ছাত্র সমাবেশ চলছিল। হঠাৎ করেই তানিজদ ইসলাম ও নিরবের মধ্যে বাকবিতন্ডা লেগে যায়। এক পর্যায়ে তানজিদ তার পরিবারের লোকজন ডেকে নিয়ে এসে আমাদের জেলা ও শহর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালায়। হামলায় পৌর ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আল শাহরিয়ার নিরব গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। তানজিদ ইসলাম ছাত্রলীগের কেউ না বলেও দাবি করেন তিনি।

হামলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগে নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, শহর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রেলওয়ে স্টেশনে ছাত্রসমাবেশ করছিল। সেখানে আমার ভাগ্নে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তানজিদ ইসলামও ছিল। হঠাৎ তানজিদকে মারধর করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে আমি বাসা থেকে দৌড়ে যাই। তবে কোন প্রকার হামলার ঘটনার সাথে আমি ছিলাম না।

জামালপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর জানান, রেলস্টেশন চত্ত্বরে ছাত্র সমাবেশে হামলার ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(আরআর/এসপি/জুলাই ১৬, ২০২৪)