ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ষান্মাসিক মূল্যায়ন পরিক্ষা পদ্ধতিতে সরকারের বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে যাচ্ছে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ অসন্তোষ ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে।

একাধিক শিক্ষার্থী ও সচেতন অভিভাবকগণ জানান, ২০২৪ সালের ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণী পর্যন্ত পরিক্ষা পদ্ধতি এবং প্রশ্নপত্র সরবরাহ ছাড়াও অর্থনৈতিক অনিয়মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়ম বহির্ভূত ফি আদায়, শিক্ষার্থীদের চাপ প্রয়োগ করে পরিক্ষায় অংশগ্রহণ এবং শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক আরোপিত নিয়ম ভঙ্গ করে নিজ প্রশ্নপত্রে পরিক্ষা গ্রহণ চলমান রয়েছে। তবে ব্যতিক্রম শুধু ইংরেজি প্রশ্নপত্রে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বড়দাহ দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ৭ম শ্রেণীর ইংরেজি প্রশ্ন ধার নিয়ে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিদার হোসেন ব্যক্তিগত প্রভাব বিস্তার করে হরহামেশায় ধরাকে স্বরাজ্ঞান করে যাচ্ছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানে অবৈধভাবে যোগদানের পর থেকেই বেপরোয়া নিয়ম কানুন রীতিনীতি চালু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন বলে তথ্য অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, একজন ক্রীড়া শিক্ষক বিধি বহির্ভূতভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ লাভের পর থেকেই নানা অনিয়মের মধ্যে প্রতিষ্ঠান চালিয়ে আসছেন। উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের সাথে সংগতি না রেখে ব্যক্তিগত লাভবান হওয়ার জন্য একক সিদ্ধান্তে চলমান ষান্মাসিক মূল্যায়ন পরিক্ষা গ্রহনের বিরুদ্ধে স্থানীয় অভিভাবকগণ অভিযোগ করলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। তাছাড়া অতিরিক্ত ফি আদায় একান্তই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে জানা গেছে।

মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হাবিবুর রহমান দৌলত জানান, ‘শিক্ষক এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সরকারি নিয়মের পরিপন্থি এবং সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করতেই নানা অপকৌশলে ষা¤œাসিক মূল্যায়ন পরিক্ষা গ্রহণ করে যাচ্ছেন। প্রশ্নপত্রের ধরণ দেখে শিক্ষার্থীদের মাঝেও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে। আশপাশের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে মিল না থাকায় বিষয়টি এলাকায় ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে।’

উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির একাধিক শিক্ষক নেতা জানান, ‘প্রধান শিক্ষক দিদার হোসেন ব্যক্তিগত প্রভাবশালী এবং কৌশলী হওয়ার কারনেই তার প্রতিষ্ঠান নিয়ে অন্যান্য শিক্ষকদের বক্তব্য অকার্যকর। তবে কি কারনে তিনি একক সিদ্ধান্তে সরকারি নীতি বিরোধী কর্মে লিপ্ত আছেন তা পরিস্কার নয়।’

অভিযোগের বিষয়ে মৌবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিদার হোসেন জানান, ‘অভিযোগ সঠিক নয়। ষান্মাসিক মূল্যায়ন পরিক্ষার প্রশ্নপত্র শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে সেটা পরিক্ষার্থীদের মাঝে দেয়া হয়েছে এবং সেই প্রশ্নপত্রেই পরিক্ষা নেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত পরিক্ষার ফি আদায় প্রসঙ্গে জানান, ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণীর পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র দশম শ্রেণীর পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০টাকা নেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুলতান আলী জানান, ‘শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কতৃক নির্ধারিত প্রশ্নপত্রের বাইরে কোন স্কুলে শিক্ষক বা কতৃপক্ষের তৈরিকৃত প্রশ্নপত্রে পরিক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই। যদি নিয়ে থাকে তবে সেটা সম্পূর্ণ বে-আইনী। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

(এসআই/এসপি/জুলাই ১৪, ২০২৪)