আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : নিখোঁজের দুই মাস পর সেতুর নিচ থেকে সোহেল ফরাজীর (১৫) নামের এক কিশোরের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটক কিশোর ইমরান খানের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে নিয়ে পুলিশ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন খয়রাবাদ সেতুর নিচ থেকে নিহত সোহেলের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে। 

দুপুরে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, নিহত সোহেল ফরাজী বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা রিফিউজি কলোনি এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক ফরিদ ফরাজীর ছেলে। আর আটক ইমরান একই এলাকার বাসিন্দা নান্না খানের ছেলে।

সোহেল ফরাজীর ভাই সোহাগ ফরাজী জানান, তার ভাই ট্রাক চালকের সহকারী (হেলপার) হিসেবে কাজ করতো। সম্প্রতি সময়ে চালক বিদেশে চলে যাওয়ায় সোহেল বেকার ছিল। দুই মাস আগে তার ভাইকে বাসা থেকে ডেকে নেয় তার বন্ধু ইমরান। তখন সোহেল বাবার ভাড়ায় চালিত ব্যাটারি রিকশা নিয়ে বের হয়। এরপর থেকে তার (সোহেল) কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এমনকি দুই মাস ধরে ইমরানও নিখোঁজ ছিল।

সোহাগ আরও জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ইমরানের সন্ধান পেয়ে তার কাছে সোহেলের বিষয়ে জানতে চাইলে সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে তাকে (ইমরান) একটি কক্ষে আটকে রেখে পুলিশ খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তাকে কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সোহেলকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তখন বিষয়টি বন্দর থানায় জানানো হয়। বন্দর থানা পুলিশ ইমরানকে নিয়ে খয়রাবাদ সেতুর নিচে গিয়ে সোহেলের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ইমরান পুলিশকে জানিয়েছে, সোহেলের ব্যাটারিচালিত রিকশা নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে তার তিন বন্ধু হৃদয়, বাপ্পি ও রাকিব। পরিকল্পনা অনুযায়ী নগরীর লাকুটিয়া সড়কের একটি দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কেনা হয়। পরে কীর্তনখোলা নদীর ওপর সেতুতে বসে এনাজিং ড্রিংকসে গুঁড়ো করা ঘুমের ওষুধ মেশানো হয়। সেখান থেকে চারজন খয়রাবাদ সেতুর নিচে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ মেশানো এনার্জি ড্রিংকস সোহেলকে পান করানো হয়। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পরে। পরে তাকে নদীর মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। পরে রিকশা বিক্রি করে ইমরান পালিয়ে যায়।

বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, আটক ইমরানের দেওয়া তথ্যে কঙ্কালের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।

(টিবি/এসপি/জুলাই ১৩, ২০২৪)