‘নজরুলের বিদ্রোহী চেতনা ধারণ করেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এনেছিলেন’
স্টাফ রিপোর্টার : বিদ্রোহী গানের সুরে নজরুল যেমন মুক্তির পথ দেখাতেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তেমনি করে একই বিদ্রোহের সুরে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান।
আজ শুক্রবার কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার পূর্ব বাঙ্গঁরা ইউনিয়ন পরিষদ কতৃর্ক আয়োজিত বিশ্ব বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের বাংলাদেশ সম্মেলন ২০২৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, নজরুল এক বিশাল সমুদ্র। নজরুল আমাদের বিদ্রোহের, আমাদের সাম্যের ও গণমানুষের কবি। নজরুলের সাম্যের গানের সুর মিলিয়ে দিয়েছিল সারা মানব জাতিকে। স্বাধীন চেতনায় মানুষ হয়ে বাচঁবার উৎসাহ দিয়েছিল বাঙালি জাতিকে। বৃটিশ শাসনের জিঞ্জির ভেঙে মুক্ত আলোয় আলোকিত হওয়ার স্বপ্ন দেখেই তিনি সেদিন বিদ্রোহী কবিতা রচনা করেছিলেন। তিনি শিকল ভাঙার যে প্রচেষ্টা কবিতার মাধ্যমে নিয়েছিলেন তার ফলেই তিনি আমাদের জাতীয় মহাকবি। এ জাতিকে মাথা তুলে দাঁড়াবার উদাহরণ হিসেবেই তিনি সারাজীবন আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
মন্ত্রী বলেন, নজরুলের বিদ্রোহের সুরে আন্দোলিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ স্বাধীন ভাবে বাঁচবার সংগ্রামে সেদিন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তার কবিতায় মানুষ নিয়ে তার ভাবনা ছিল। বিদ্রোহী গানের সুরে নজরুল যেমন মুক্তির পথ দেখাতেন ঠিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তেমন করে একই বিদ্রোহের সুরে ৭ই মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি এদেশের মানুষের অধিকার চাই।
মন্ত্রী আরও বলেন, কবি নজরুলের পথ ধরে বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়ে গেলেন স্বাধীন সত্ত্বায় বেঁচে থাকার অধিকার, স্বাধীনভাবে স্বপ্ন দেখার অধিকার। বঙ্গবন্ধু কবি নজরুলকে নিজের হৃদয়ে এমনভাবে ধারণ করেছিলেন যে, স্বাধীনতার পরে অবহেলায় পড়ে থাকা নজরুলকে খুঁজে বের করে স্বাধীন দেশে ফিরিয়ে আনলেন এবং জাতীয় কবির মর্যাদা দিলেন।
মন্ত্রী বলেন, নজরুলের যথার্থ মুল্যায়ন তখই সম্ভব হবে যখন আমরা আপাদমস্তক নজরুলকে চিনব, আমরা নজরুলকে চর্চ করব, আমাদের মননে, আমাদের সাধনায়, আমাদের মানসিকতায়, আমাদের কর্মপ্রেরণায় আমরা নজরুলকে ধারণ করব। তাহলেই তাঁর মুল্যায়ন আমরা সঠিকভাবে করতে পারব। তিনি নজরুল নার্গিস এর স্মৃতি বিজড়িত মুরাদনগরের এই স্থানকে ধরে রাখার উদ্দেশ্যে নজরুল নার্গিস গবেষণা কেন্দ্র গঠনের প্রয়াস নেয়ার আহবান জানান এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার প্রয়োজন হলে তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে পূর্ব বাঙ্গঁরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মো: শেখ জাকির হোসেন এবং উদ্বোধক হিসেবে জনাব জাহাঙ্গীর আলম সরকার, সংসদ সদস্য, কুমিল্লা -৩ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মুরাদনগরের উপজেলা চেয়ারম্যান ড. আহসানুল আলম সরকার কিশোর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন ও রাধাকান্ত সরকার, কেন্দ্রীয় সম্পাদক, বিশ্ব বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি উপস্থিত ছিলেন।
(পিআর/এসপি/জুলাই ১২, ২০২৪)