আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আমেজ কাটতে না কাটতেই জমে উঠেছে জেলার প্রথম শ্রেনীর গৌরনদী পৌরসভার মেয়র পদে উপ-নির্বাচন। প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচার-প্রচারনা আর পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো পৌর এলাকার প্রতিটি পাড়া ও মহল্লা।

নির্বাচনের একেবারে শেষ মুহুর্তে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ছুটে চলছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। চারজন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে থাকলেও নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা আলহাজ্ব মোঃ আলাউদ্দিন ভূঁইয়া ও তার সমর্থকরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করে ইতোমধ্যে ভোটারদের মন জয় করে নিয়েছেন। এতে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী মোবাইল ফোন মার্কার প্রার্থীর সমর্থকরা দিশেহারা হয়ে পরেছেন। এরইমধ্যে এলাকায় মহড়া দিয়ে নারিকেল গাছ মার্কার সমর্থকদের ওপর হামলা, হুমকি, ভোটগ্রহণের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্র দখল, মোবাইল ফোনে ভোট না দিলে ভোট কেন্দ্রে আসতে নিষেধ করার হুমকি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্ধী অপর প্রার্থীরা।

এসব অভিযোগের কথা উল্লেখ করে ইতোমধ্যে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নারিকেল গাছ মার্কার প্রার্থী আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। শনিবার সকালে টরকী বন্দর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারনা চলাকালীন সময় মেয়র প্রার্থী আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বিগত ১৩ বছরে পৌরবাসীর ওপর ট্যাক্সের বোঝা চাঁপিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহাসড়কের পাশে এবং পবিত্রতম স্থান কসবার হযরত মল্লিক দূত কুমার পীর সাহেবের মাজারের পাশে পৌরসভার ময়লা ফেলে প্রথম শ্রেনীর গৌরনদী পৌরসভাকে একটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করে রাখা হয়েছে। ময়লার দূর্গন্ধে মানুষ চলাচল ও বাড়ি ঘরে থাকতে পারছেন না। পৌরসভার গুরুত্বপূর্ন মহল্লায় সড়ক বাতি নেই, কার্পেটিং সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা, নাগরিক সুবিধা তলানিতে পৌঁছেছে। তাই আগামী ২৬ জুন নারিকেল গাছ মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করা হলে ট্যাক্স অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি পৌর এলাকায় ময়লার ভাগার থাকবেনা। ময়লা অপসারনের জন্য ডাম্পিং ষ্টেশন চালু করা হবে। কার্পেটিং সড়কের টেকসই মেরামত, সড়ক বাতি স্থাপনসহ শতভাগ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে মাদক, কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসমুক্ত স্মার্ট গৌরনদী পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

মেয়র প্রার্থী আলাউদ্দিন ভূঁইয়া, সিকদার সফিকুর রহমান রেজাউল ও মফিজুর রহমান মিলন বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য এখনই মাঠপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বৃদ্ধি, ভোটগ্রহণের দিন প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে স্থায়ীভাবে ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ ও পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা জরুরি হয়ে পরেছে। ওই তিন প্রার্থীর সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্যর মনোনীত প্রার্থী দাবি করে নির্বাচনে মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচএম জয়নাল আবেদীন। তার পক্ষে ইতোমধ্যে এলাকায় নানা প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন সদ্য বিদায়ী সাবেক মেয়র হারিছুর রহমান।

উল্লেখ্য, গৌরনদী পৌরসভার মেয়র হারিছুর রহমান পদত্যাগ করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছেন। তার পদত্যাগের কারণে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন জেলা নির্বাচন অফিসার। আগামী ২৬ জুন উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে। এ পৌরসভার প্রায় ৩৭ হাজার ২৪৩ জন ভোটার নয়টি ওয়ার্ডের ১৪টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

(টিবি/এসপি/জুন ২২, ২০২৪)