বিশেষ প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় প্রাইভেট পড়তে আসা সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মাহাবুব রহমান (৪৩) নামের এক গণিত শিক্ষককে অবশেষে শুক্রবার কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গ্রেপ্তার হওয়া ওই শিক্ষক নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ ইউ এ খান উচ্চ বিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

নবীনগর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজল কান্তি দাশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, 'এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে নবীনগর থানায় মামলা করেছেন।'

মামলার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রসুল্লাবাদ ইউ এ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ওই শিক্ষক মাহাবুব রহমান (৪৩) বিদ্যালয়ের অদূরে জনৈক চুন্নু মিয়ার বাড়ির একটি ঘরে সকাল বিকাল ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়মিত প্রাইভেট পড়াতেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১০ জুন সকালে রসুল্লাবাদ গ্রামের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী (১৩) শিক্ষক মাহাবুবের কাছে প্রাইভেট পড়তে আসে। কিন্তু ওইদিন বৃষ্টি থাকার কারণে অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা না আসায় শিক্ষক মাহাবুব সেই সুযোগটি নেয়।

ছাত্রীর মা মামলার বাদী জানান, শিক্ষক মাহাবুব ওইদিন আমার মেয়েটিকে ঘরে একা পেয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। অসভ্য ওই শিক্ষক আমার মেয়ের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এক পর্যায়ে আমার মেয়েটি সেসময় আর্ত চিৎকার করলে, শিক্ষক মাহাবুব পালিয়ে যায়। ওইদিন স্কুলে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ঘটনাটি পরে স্কুলের এক শিক্ষককে জানিয়ে আমার মেয়ে বাড়ি চলে আসে। কিন্তু গত দুইদিনেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায়, পরে আমি থানায় মামলা করি'।

এলাকাবাসি জানান, 'অভিযুক্ত শিক্ষক মাহাবুবের মেয়ের ঘরে নাতিও রয়েছে। তাই এরকম জঘণ্য ঘটনাটি কিভাবে তিনি ঘটালেন, আমরা ঠিক বুঝতে পারছিনা।'

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে কথা বলা যায়নি। তবে ওই শিক্ষকের একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানায়,'ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক। মূলত রসুল্লাবাদ গ্রামে দুটো বিবাদমান গ্রুপ আছে। শিক্ষক মাহাবুব ওই দুটো গ্রুপের ধাক্কাধাক্কিতে বলির পাঠা হয়েছেন।'

এদিকে একাধিক সূত্র জানায়, পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক ও ভিকটিম ওই ছাত্রী ও তার মাকে বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় ডেকে এনে, রাত ৯টা টা পর্যন্ত ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। ঘটনাটি এক পর্যায়ে একাধিক ব্যক্তি নানাভাবে সমঝোতারও চেষ্টা চালায়। কিন্তু ঘটনাটি গণমাধ্যম ও ফেসবুকে ভাইরাল হলে, পুলিশ শেষ পর্যন্ত মামলা গ্রহণ করে পরদিন শুক্রবার শিক্ষককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।'

নবীনগর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজল কান্তি দাশ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, 'ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মামলা করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে কোর্টে চালান করা হয়।'

(জিডি/এসপি/জুন ১৫, ২০২৪)